অধিকার: শুক্রবার অজমেরে। ছবি: এপি।
লোকসভার আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের বুথ ফেরত সমীক্ষা স্বস্তিতে রাখল না নরেন্দ্র মোদীর বিজেপিকে। বিশেষ করে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যের সমীক্ষায় যা ইঙ্গিত, তাতে সেখানে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকেরই। উল্টে সেখানে রাহুল গাঁধীর দল বাজি মারতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে তারা।
একাধিক চ্যানেল ও সংস্থার সমীক্ষাগুলির গড় দেখাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-কংগ্রেসের মধ্যে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। যদিও এবিপি নিউজ-সিএসডিএসের সমীক্ষা বলছে, ১২৬টি আসন পেয়ে শিবরাজ সিংহ চৌহানের গদি কেড়ে নেবে কংগ্রেস। ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৬। তার থেকে ঢের নীচে থাকতে পারে বিজেপি। একই ভাবে, সমীক্ষার গড় দেখাচ্ছে, বসুন্ধরা রাজের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে অনায়াস জয় পাবে কংগ্রেস। এবিপি নিউজের অবশ্য অনুমান, মরুরাজ্যে কংগ্রেসের জয় আসবে টায়ে-টায়ে। ছত্তীসগঢ়ে এবিপি নিউজ রমন সিংহেরই ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে বাকিদের গড় বলছে, বিজেপির তুলনায় কংগ্রেস সামান্য এগিয়ে এবং সরকার গড়ার চাবি থাকবে মায়াবতী-অজিত জোগীর হাতে। অন্য দিকে, তেলঙ্গানায় চন্দ্রশেখর রাও ক্ষমতা ধরে রাখবেন এবং মিজোরাম কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে।
বুথফেরত সমীক্ষার ফল যে অতীতে সব সময় মিলেছে, এমন নয়। মানুষ কাকে ভোট দিলেন, সে কথা সমীক্ষকদের কাছে জানান কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছেই। বিশেষ করে লড়াই যখন হাড্ডাহাড্ডি, তখন অনুমানের কাজ আরও কঠিন হয়ে পড়ে। তবুও এই ধরনের সমীক্ষা থেকে ভোটের চালচিত্রের একটি আভাস পাওয়া যায়।
সমীক্ষার ফল নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও দুই প্রধান দলই মানছে, লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। প্রকাশ্যে দু’দলের নেতারাই দাবি করছেন, জয় হবে তাঁদেরই। কিন্তু ঘরোয়া মহলে দু’দলই উদ্বেগ গোপন রাখছে না। তার প্রধান কারণ, বিধানসভা ভোটে বহু আসনে সামান্য ব্যবধানে হারজিতের ফয়সালা হয়। যে কারণে কোনও সমীক্ষাতেই নিশ্চিত করে সব আসনের নির্ভুল ফলাফল অনুমান করা সম্ভব নয়। যেমন কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘তিনটি বড় রাজ্যেই স্পষ্ট, মানুষ বিজেপিকে হারাতে চান। বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভও স্পষ্ট। এই ভোটের ফলের উপরেই আগামী লোকসভার জোট এবং ভোটের ফল অনেকটা নির্ভর করবে।’’
মুখে না বললেও বিজেপি নেতারা মানছেন, এ বারে কংগ্রেস তাঁদের সঙ্গে টক্কর দিয়েছে সমানে সমানে। তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে টানা তিন বার সরকার চালানোর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া একটা আছেই। আর রাজস্থানে গত দু’দশক ধরেই প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলেছে। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘শেষ মুহূর্তে অনেক ক্ষত মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ সমীক্ষার হিসেব ভুল হবে।’’