জাতীয় নির্বাচন কমিশন।—ফাইল চিত্র।
নারী-পুরুষের সমানাধিকার। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় নারীর পূর্ণাঙ্গ অংশগ্রহণ— এই দুইকে বাস্তবায়িত করতে পদক্ষেপ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ‘পিঙ্ক বুথ’ তৈরিতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
এ মাসেই ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ এবং মিজোরামের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। রাজস্থান এবং তেলঙ্গানা নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরে হওয়ার কথা। পাঁচ রাজ্যে ৬৭৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ১,৭৪,৫০৭টি বুথ রয়েছে। আর এই পাঁচ রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তত একটি করে বুথ সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। যা ‘পিঙ্ক’ বুথ বলে পরিচিত হবে বলে জানাচ্ছেন কমিশনের একটি সূত্র। সেখানে মহিলা ভোটকর্মীই নন। নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত রক্ষী বা পুলিশকর্মীও মহিলাই হবেন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ লোকসভা নির্বাচন বা তার পরবর্তী নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মহিলা পরিচালিত বুথ করলেও তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করেনি কমিশন। সে ক্ষেত্রে তাদের মতো করে কয়েকটি জেলাতে মহিলাদের ভোটকর্মী হিসাবে বুথে দায়িত্ব দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট সিইও দফতর। পাশাপাশি, মহিলা ভোটকর্মী হলেও নিরাপত্তারক্ষীর বিষয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা ছিল না তাদের। কিন্তু এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে ‘পিঙ্ক’বুথে সবটাই মহিলাদের পরিচালনায় হওয়ার কথা রয়েছে। এই ধরনের বুথ বাছাইয়ে যে এলাকায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি, তা প্রাধান্য পেতে পারে বলে মত কমিশনের।
চলতি বছরের কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে ৪৫০টি ‘পিঙ্ক’ বুথ তৈরি হয়েছিল। যার পোশাকি নাম ছিল ‘সখী’ বুথ। যেখানে বুথকে ‘পিঙ্ক’ বা গোলাপি রঙের বেলুন দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফটকেও ছিল ওই রঙের ব্যবহার। এমনকি, কর্মীদের পোশাকও গোলাপি রঙের ছিল। কোথাও কোথাও বুথের দেওয়ালও ওই রং করা হয়েছিল। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থানে ‘পিঙ্ক’ বুথ তৈরিতে কোনও আপত্তি না থাকলেও তেলঙ্গানা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) পতাকার রঙ ‘পিঙ্ক’। এমনকি, নির্বাচনের প্রচারে ব্যানার-হোর্ডিংয়েও ‘পিঙ্ক’ ব্যবহার করছে। সে কারণে তেলঙ্গানাতে মহিলা পরিচালিত বুথে ওই নির্দিষ্ট রঙের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, মহিলা পরিচালিত বুথকে আলাদা করে চিহ্নিতকরণের জন্য ‘পিঙ্ক’-এর পরিবর্তে অন্য কোনও রং ব্যবহার করুক কমিশন। এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। তবে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে একই পদক্ষেপ করা হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য এখনই মুখ খুলতে নারাজ কমিশনের কর্তারা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নারী-পুরুষের ভোটাধিকারের ব্যবধান ছিল প্রায় দেড় শতাংশ।