প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
এক দিকে কেসিআর-এর শক্ত ঘাঁটি। ময়দানে রয়েছেন চন্দ্রবাবু। তাঁর সঙ্গে আবার কংগ্রেসের গাঁটছড়া। তেলঙ্গানার এই ত্রিশুল সরিয়েও দাক্ষিণাত্যবিজয়ের স্বপ্ন দেখছে গেরুয়া ব্রিগেড। সেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা নরেন্দ্র মোদী এ বার তেলঙ্গানায় ভোটপ্রচারে গিয়ে অভিযোগ তুললেন ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচ’-এর। যেটা নাকি খেলছে কংগ্রেস তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)।
সময়ের আগেই বিধানসভা ভেঙে দিয়ে ভোটে যাচ্ছেন টিআরএস প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। তেলঙ্গানায় এবার ত্রিমুখী লড়াই। শাসক দল টিআরএস তো রয়েছেই। যে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলঙ্গানা হয়েছে, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু এ বছরের গোড়াতেই এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। জোট করেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে। তেলঙ্গানার ভোটে শামিল এই জোটও। অন্য প্রান্তে বিজেপি। দক্ষিণের রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র কর্ণাটক আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত কাঁটা দিয়েছে জেডিএস-কংগ্রেস জোট। বাকি কোনও রাজ্যেই বিজেপির প্রভাব কার্যত নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন ধরেই তাই মোদী-শাহ্ জুটির নজরে দক্ষিণ।
তেলঙ্গানায় দ্বিতীয়বার বিধানসভার ভোটগ্রহণ ৭ ডিসেম্বর। দক্ষিণের রাজ্যে পদ্ম ফোটানোর স্বপ্ন এবার তাই তেলঙ্গানায়। মঙ্গলবার মোদীর নির্বাচনী সভা ছিল হায়দরাবাদ থেকে প্রায় পৌনে দু’শো কিলোমিটার দূরের নিজামাবাদ। নিজামাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবার কেসিআর-এর মেয়ে কে কবিতা। সেখানেই সভায় কেসিআর এবং কংগ্রেসকে এক দাঁড়িপাল্লায় তুলে মোদীর তোপ, দুই দল ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলছে। যুক্তি সাজিয়েছেন অতীত ঘেঁটে, ‘‘এনডিএ জমানায় মন্ত্রী ছিলেন কেসিআর। রাজনীতিতে তাঁর প্রশিক্ষণ হয়েছে কংগ্রেসের হাতে। তাই তিনিও পারিবারিক প্রথার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আর কংগ্রেসের মতোই কেসিআর-ও রাজ্যের উন্নয়নে পুরোপুরি ব্যর্থ।’’
আরও পড়ুন: রাজনীতি আসলে হাজার সম্ভাবনার মিশেল, বোঝাচ্ছে তেলঙ্গানা
এর পর স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে মোদী আক্রমণ করেন, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারও কংগ্রেসের মতো কোনও কাজ না করেই বসে থাকতে চাইছে। কংগ্রেস যেমন ৫০-৫২ বছর ধরে কিছুই করেনি, সেই স্টাইলই নিয়েছেন কেসিআর। কিন্তু এখন আর সেটা হবে না।’’
আরও পডু়ন: তারাপীঠে রথের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী, ব্রিগেডের আগে রাজ্যে ১০টি জনসভা মোদী-শাহের
কিছুদিন আগেই দেশ জুড়ে চালু হয়েছে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প। এই স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে সুবিধা পাবেন দেশএর প্রান্তিক শ্রেণির মানুষজন। কিন্তু কেসিআর কেন্দ্রের সেই ‘মোদিকেয়ার’ প্রকল্প রাজ্যে গ্রহণ করেননি টিআরএস প্রধান। তেলঙ্গানায় রাজ্য সরকারের নিজস্ব স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প রয়েছে। এ নিয়ে মোদী তোপ দেগে বলেন, ‘‘কেসিআর ওই প্রকল্প গ্রহণ করেননি, কারণ তিনি ভয় পেয়েছেন। ওই প্রকল্প রাজ্যে চালু করলে মানুষ তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতেন।’’
নিজামাবাদের পর মেহবুব নগরেও একটি সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও কংগ্রেস, টিআরএস-কে এক হাত নেন মোদী।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)