কে চন্দ্রশেখর রাও এবং নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।
সামনে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের আক্রমণাত্মক বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। দিন কয়েক আগে কংগ্রেস-বিজেপি ‘ভাই-ভাই’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। তাঁকে ‘হিন্দু-মুসলিম রোগে আক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০১৪ সালে তেলঙ্গানার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন কেসিআর। ক্ষমতায় এসে রাজ্যের মুসলিম জনসংখ্যার জন্য কর্মক্ষেত্রে ১২ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে সায় না মেলায় আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এ দিকে দোরগোড়ায় পরবর্তী নির্বাচন। ৭ ডিসেম্বর নিজেদের মতামত জানাবেন মানুষ।
বৃহস্পতিবার একটি জনসভায় কেসিআর বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে ২০-৩০ বার অনুরোধ করেছি। চিঠি লিখেছি গোটা পঞ্চাশেক। কিন্তু শুনলে তো! নরেন্দ্র মোদী হিন্দু-মুসলিম রোগে আক্রান্ত। অন্য কিছু ওঁর কানে ঢোকে না। সবাইকে সমান সম্মান দিতে জানেন না। সামান্যতম সহানুভূতি বোধটুকু নেই ওঁর মধ্যে। তবে আমরাও হাল ছাড়ছি না। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তখন কেন্দ্রকে আমাদের দাবি মেনে নিতেই হবে। প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে সকলকে।’’
আরও পড়ুন: ১০-২০ টাকার দিন শেষ! ন্যূনতম ৩৫ টাকার রিচার্জ না করালে বন্ধ হবে নম্বর
আরও পড়ুন: হাতে স্টিয়ারিং, চোখ মোবাইলের ডান্স আইটেমে, এ ভাবেই বাস চালিয়ে গেলেন ড্রাইভার!
নির্বাচন এগিয়ে আনতে মেয়াদ শেষ হওয়ার বছরখানেক আগেই ইস্তফা দিয়ে দেন কেসিআর। বর্তমানে রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তিনি। তাঁর এমন মন্তব্যে চটেছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা জেপি নাড্ডা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেসিআরের মন্তব্য অসংবিধানিক এবং যথেষ্ট নিন্দনীয়। তেলঙ্গানার মানুষ এই ধরনের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি কখনওই মেনে নেবেন না। তাঁর দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) নেতাদের বিষয়টা যত তাড়াতাড়ি বোঝেন ততই মঙ্গল। সংরক্ষণের দোহাই দিয়ে মুসলিমদের সন্তুষ্ট করতে চাইছেন ওঁরা। এতে সরাসরি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোয় আঘাত হানা হচ্ছে।’’
হায়দরাবাদের বিধায়ক ও ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি যদিও কেসিআরের মন্তব্য সমর্থন করেন। টুইটারে লেখেন, ‘‘একেবারে ঠিক বলেছেন কেসিআর। নরেন্দ্র মোদী সত্যিই হিন্দু-মুসলিম ব্যাধিতে আক্রান্ত। এই রোগের একটাই দাওয়াই, সংবিধান।’’
টিআরএস প্রধানের মোদী বিরোধিতা এই প্রথম নয় যদিও। তবে ব্যক্তিগত ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে এমন আক্রমণ আগে করেননি তিনি। কয়েক মাস আগে গোপনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক বার বৈঠক করেন তিনি। সেই সময় তাঁদের মধ্যে নির্বাচনী জোট গড়ে ওঠা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তবে কেসিআর নিজেই তা উড়িয়ে দেন। বরং ২০১৯ সালে তিনি ‘অ-বিজেপি’ এবং ‘অ-কংগ্রেসী’ সরকার দেখতে চান বলে দাবি করেন।