National News

মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করার আগে মাস্টারস্ট্রোক! অডিয়ো বার্তায় কর্মীদের মত নিলেন রাহুল

বুধবার দিনভর প্রায় দু’লক্ষ ৪০ হাজার কর্মীর মোবাইলে পৌঁছেছে এই বার্তা। তাঁরাও অধিকাংশই তাঁদের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। এ বার এই অডিয়ো বার্তার ফলাফলের উপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাহুল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৩০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী বাছতে অডিয়ো বার্তায় কর্মীদের মতামত নিলেন রাহুল গাঁধী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

‘‘একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করছি আপনাদের। নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন?’’ মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মোবাইলে চলে আসছে এই বার্তা। প্রেরক রাহুল গাঁধী। তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাছতে এই ‘হাইটেক’ এবং জনমোহিনী পদ্ধতিই বেছে নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। অডিয়ো বার্তা পাঠিয়ে জানতে চাইছেন দেশের ‘হার্টবিট’। এই বার্তার ফলাফলের উপর দাঁড়িয়েই আজ বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাহুল গাঁধী। আর কংগ্রেস সভাপতির এই চমকে বেজায় খুশি দলের নিচু স্তরের কর্মীরা।

Advertisement

তিন রাজ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি জয়ী বিধায়করা। দৌড়ে রয়েছেন একাধিক নেতা। তাই বল ঠেলেছেন রাহুল গাঁধীর কোর্টে। সব কূল রক্ষা করে দুরূহ প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে রাহুল বের করেছেন অভিনব এই পন্থা। একটি অডিয়ো বার্তায় তিনি প্রথমেই জয়ী বিধায়কদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন। নিচু তলার কর্মী থেকে শীর্ষ নেতাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন সেই বার্তায়। তার পর কর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁরা কাকে চান। উত্তরদাতাদের বার্তা গোপন রাখার আশ্বাস দিয়ে রাহুল এও বলছেন, শুধুমাত্র এক জনের নামই নির্বাচন করুন। এক মাত্র আমিই সেই মত জানতে পারব। দলের অন্য কেউ জানতে পারবে না। একটি ‘বিপ’ শব্দের পর নামটি বলুন।’’

বুধবার দিনভর প্রায় দু’লক্ষ ৪০ হাজার কর্মীর মোবাইলে পৌঁছেছে এই বার্তা। তাঁরাও অধিকাংশই তাঁদের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। এ বার এই অডিয়ো বার্তার ফলাফলের উপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাহুল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত, বড় দায়িত্বে সিন্ধিয়া-পাইলট?

সাধারণত নেতাদের মতামতের উপর ভিত্তি করেই কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেয় রাজনৈতিক দলগুলি। ব্যতিক্রম ঘটালেন রাহুল গাঁধী। এবং অডিয়ো বার্তা পাঠিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মতামত নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত রাহুলের মাস্টারস্ট্রোক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। কারণ, এতে একাধিক সুবিধা হবে রাহুলের।

প্রথমত, দলের সভাপতি হিসাবে নিচু তলার কর্মীদের মনোভাব কী, তা বুঝতে পারবেন তিনি। সেই অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। আবার কর্মীদের এই মতামত লোকসভা ভোটের রণকৌশল তৈরিতেও কাজে আসবে। কারণ, কার পাল্লা ভারী, কোন স্তরের এবং কোন এলাকার নেতা-কর্মীরা কার পক্ষে রয়েছেন, সেটাও বুঝতে পারবেন তিনি।

আরও পডু়ন: লোকসভায় ভোট আসবে কোথা থেকে? উনিশের বিপদই ভাবনা বিজেপির

দ্বিতীয়ত, নিচু স্তরের কর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়বে রাহুলের। ইতিমধ্যেই সেই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। তৃণমূল স্তরের এক নেতা যেমন বলেছেন, ‘‘এটার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছিলাম। এটা নতুন কংগ্রেস। আগে কর্মীদের কথা শোন। তার পর সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নাও।’’

তৃতীয়ত, তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক, অপর গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বাঁধতে পারে। তখন রাহুল বলতে পারবেন, এটা শুধু তাঁর একার মত নয়, জনতার মত, দলের কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মত। অডিয়ো পোল-এ এটাই চেয়েছেন রাজ্যের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন