Manipur Clash

বাড়ি থেকে বেরোনোর পর সন্ধান পাওয়া যায়নি, গত তিন মাসে অশান্ত মণিপুর থেকে নিখোঁজ ৩০ জন

সম্প্রতি জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৩০ জন ব্যক্তি। নিখোঁজদের তালিকায় যেমন রয়েছেন প্রৌঢ় সাংবাদিক, তেমনই রয়েছেন পড়ুয়ারাও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ইম্ফল শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ১০:১৬
Share:

মণিপুর হিংসার একটি ছবি। ফাইল চিত্র।

মণিপুর হিংসার আর এক ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ্যে এল। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে সে রাজ্য থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৩০ জন ব্যক্তি। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালানো হলেও এখনও পর্যন্ত কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে খুব খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার পরিজনেরা।

Advertisement

নিখোঁজদের তালিকায় যেমন রয়েছেন প্রৌঢ় সাংবাদিক, তেমনই রয়েছেন পড়ুয়ারাও। গত ৩ মে থেকে গোষ্ঠী হিংসায় দীর্ণ মণিপুর। এই সময়ে সে রাজ্যে একাধিক খুন, গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই ৬০০০ জ়িরো এফআইআর দায়ের হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই এফআইআর-এর ক্ষেত্রে রাজ্যের যে কোনও থানাতেই অভিযোগ দায়ের করা যায়। পরে পুলিশ যে থানা এলাকায় অপরাধ হয়েছে বা তেমন অভিযোগ রয়েছে, সেখানে বিষয়টি পাঠিয়ে দেন। নিখোঁজ ডায়েরি খতিয়ে দেখেই জানা গিয়েছে, ৩০ জনের সন্ধান এখনও মেলেনি। তবে এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত ৬ মে থেকে নিখোঁজ পেশায় সাংবাদিক, গবেষক এবং সমাজকর্মী অ্যাটম সমরেন্দ্র সিংহ। খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর সঙ্গে থাকা সহকর্মী ইয়ামখাইবাম কিরণকুমার সিংহেরও। সমরেন্দ্রর স্ত্রী কবিতা জানিয়েছেন, রাজ্যের হিংসা উপদ্রুত এলাকায় খবর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। আপাতত তাঁর ফেরার অপেক্ষায় বসে রয়েছে পরিবার। সমরেন্দ্রর ছেলে থইহেনবার কথায়, “বাবা চেয়েছিলেন যে আমি বিজ্ঞানী হই। বাবাই ছিলেন সংসারের এক মাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। জানি না, বাবা কবে ফিরবে।”

Advertisement

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল ১৭ বছর বয়সি হিজাম লুয়াংবি লিনথোইনগামবির। গত ৬ জুলাই সকালে কার্ফু আংশিক শিথিল করার পর সে ভেবেছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তাই প্রায় দু’মাস পর বন্ধুর বাইকে চেপে নিটের কোচিং নিতে বেরিয়েছিল সে। কিন্তু তার পরিবার পথ চেয়ে বসে রইলেও এখনও ঘরে ফেরেনি বাড়ির ছেলে। হিজামের ফোনটি চূড়াচাঁদপুর জেলাতে পাওয়া গেলেও, তার বন্ধুর ফোনটি পাওয়া গিয়েছে বিষ্ণুপুর জেলায়। এই দু’টি জেলাই মেইতেই অধ্যুষিত উপত্যকা অঞ্চলের সঙ্গে কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলের সীমানা। তাই খারাপ সম্ভাবনার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ-প্রশাসনও।

গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। তার পর থেকে তিন মাস কেটে গেলেও এখনও সেই হিংসায় লাগাম পরানো যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন