দশ বছর আগের ঘটনা।
পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে বলতে চান। অথচ তাঁকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষোভে রাগে লোকসভার ভিতরে ডেপুটি স্পিকার চরণজিৎ সিংহ আটাওয়ালের দিকে এক তাড়া কাগজ ছুড়ে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে নাটকীয় পরিস্থিতি। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় তখন লোকসভার স্পিকার। পরে যদিও তিনি এক কথায় খারিজ করে দিয়েছিলেন মমতার ইস্তফা।
২০০৫ থেকে এত বছর পেরিয়ে, রাজনীতির গতিপ্রকৃতি অনেক বদলে গিয়েছে। কিন্তু সেই একই অভিযোগে লোকসভার স্পিকারের চেয়ারের প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের দৃষ্টিভঙ্গির হয়তো বিশেষ বদল হয়নি। বর্তমান লোকসভার গঠনের কয়েক মাস মাত্র কেটেছে। তার মধ্যেই লোকসভার স্পিকারের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাতের ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। চলতি শীতকালীন অধিবেশনে এ বার স্পিকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হলেন তৃণমূলের সাংসদেরা।
বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে শুক্রবার সংসদ চত্বরে ধর্নায় সামিল হয়েছিলেন সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির মতো তৃণমূলের সাংসদেরা। এখানে তাঁরা সরব হয়েছেন স্পিকারের সমালোচনায়। এমনকী অধিবেশন চলাকালীনও বাগ্যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন এবং সাংসদ সৌগত রায়কে। তবে, বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদীয় যুদ্ধের কৌশল হিসেবে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পিকার-বিরোধিতা করলেও কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দল এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। বরং বুঝিয়ে দিয়েছে, এ নিয়ে তারা তৃণমূলের সঙ্গে নেই।
কয়েক দিন ধরেই ঘরোয়া আলোচনায় স্পিকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলিরা। অভিযোগ ছিল, লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন তৃণমূল এবং বিরোধী সাংসদেরা ওয়েলে নেমে চেঁচিয়ে গলা ফাটালেও অভিযোগ শোনেননি স্পিকার। তাঁদের বলতে দেননি। এমনকী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা অভিযোগ করেছেন যে তাঁরা কিছু বলতে গেলে মাইক অফ করে দেওয়া হচ্ছে।
আজ সংসদ থেকে যখন তৃণমূল ওয়াক আউট করার সময় সৌগত রায়ের দিকে তাকিয়ে স্পিকার বলেন, “আপনি যান।” জবাবে সৌগতবাবু মন্তব্য করেন, “যে ভাবে আপনি সংসদ চালাচ্ছেন তা লজ্জার।” পরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্পিকার দু’মুখো নীতি নিচ্ছেন। আমাদের বলতে দেওয়া হচ্ছে না। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আগামী সোমবার স্পিকারের অফিসে গিয়ে তাঁকেই আমরা অসন্তোষের কথা জানাব।”