Facebook

ডিজিটাল দুনিয়ায় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, সমালোচনার মুখে কেন্দ্র

কেন্দ্রের এই নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি ফেসবুক বা টুইটারের মতো সংস্থা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সমাজ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্ল্যাটফর্মের উপরে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সম্প্রতি কিছু নতুন নিয়ম ও নজরদারি ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পিছনে মহিলাদের নিরাপত্তা রক্ষা, ভুয়ো খবর ও ছবির মাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়ানো রোখার মতো বেশ কয়েকটি যুক্তি দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাদের দাবি, সরকার-বিরোধী বক্তব্যের কণ্ঠরোধ করতেই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে মতপ্রকাশ ও বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার খর্ব হবে।

Advertisement

কেন্দ্রের এই নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি ফেসবুক বা টুইটারের মতো সংস্থা। টুইটারের মুখপাত্র শুধু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘স্বচ্ছতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করেই ভারত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আমরা আগ্রহী।’’ তবে মোজ়িলার মতো ইন্টারনেট ব্রাউজ়ার সংস্থা স্পষ্ট ভাবেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। সংস্থাটির দাবি, অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক কেন্দ্র। মোজ়িলা কর্পোরেশনের তরফে উদ্ধব তিওয়ারি বলেছেন, ‘‘এই নতুন নিয়ম স্পষ্ট ভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে।’’ তাঁর আরও দাবি, এর ফলে নিরাপত্তা বা গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টিও লঙ্ঘিত হবে। উদ্ধবের বক্তব্য, ‘এনক্রিপশন’-এর মাধ্যমে সুরক্ষিত কথোপকথনের উৎস খোঁজার অর্থই হল ব্যবহারকারীর সুরক্ষা ও গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা। একই সুর শোনা গিয়েছে ভারতে সাইবার অধিকার রক্ষা নিয়ে আন্দোলনকারী কিছু কর্মীর মুখেও। একটি ডিজিটাল সংবাদ পোর্টালের কর্ণধার নিখিল পাহওয়া যেমন বলছেন, ‘‘এই নতুন নিয়ম খুবই উদ্বেগজনক ও বিপজ্জনক। কারণ এতে স্পষ্টতই বাক্‌ স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হবে।’’

বিরোধীদের তোপের মুখেও অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড় কেন্দ্র। কালই কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক ২০২১ সালের জন্য ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম সংক্রান্ত কিছু নিয়ম জারি করেছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল সংবাদের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখাই যার মূল উদ্দেশ্য। নিয়মের ১৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবের উল্লিখিত যে কোনও একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু ব্লক করার ক্ষমতা থাকবে। এ নিয়ে আজ কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে এক জন আমলাকে। এই সরকার কোনও ক্ষেত্রেই সংযম দেখাচ্ছে না।’’

Advertisement

কেন্দ্রের দাবি, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মাধ্যমের বিষয়বস্তু ব্লক করার ক্ষমতা ২০০৯ সালেই বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিবকে দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই ক্ষমতা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবকে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন