নগরোন্নয়ন কেড়ে নিয়ে বাবুলকে ভারী শিল্প

ভূমিকম্পের পরে এ যেন আফটারশক! প্রথমটি ছিল নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার রদবদল। তার এক সপ্তাহের মাথায় এল ঝাঁকুনি। মন্ত্রিসভা থেকে আজ ইস্তফা দিলেন নাজমা হেপতুল্লা, কর্নাটকের জি এম সিদ্ধেশ্বরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫৩
Share:

ভূমিকম্পের পরে এ যেন আফটারশক! প্রথমটি ছিল নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার রদবদল। তার এক সপ্তাহের মাথায় এল ঝাঁকুনি। মন্ত্রিসভা থেকে আজ ইস্তফা দিলেন নাজমা হেপতুল্লা, কর্নাটকের জি এম সিদ্ধেশ্বরা। মুখতার আব্বাস নকভিকে দেওয়া হল সংখ্যালঘু মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্ব। আর নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে সরিয়ে তাঁকে ভারী শিল্পের দায়িত্ব সঁপলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

বিজেপির শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভার রদবদলের সময়ই নাজমাকে সংখ্যালঘু মন্ত্রক থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। ভারী শিল্পের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জি এম সিদ্ধেশ্বরাকেও ইস্তফা দিতে বলা হয়। সিদ্ধেশ্বরার জায়গায় নতুন মন্ত্রীও আনা হয় কর্নাটক থেকে। কিন্তু নাজমা সে সময় বিদেশে ছিলেন। আর সিদ্ধেশ্বরা অনুরোধ করেছিলেন, জন্মদিনে ইস্তফা না দিয়ে কয়েক দিন পরে দেবেন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ চলে যান। আজ তিনি ফেরার পর দু’জনেই ইস্তফা দেন। ফলে খানিকটা প্রত্যাশিত ভাবেই মুখতার আব্বাস নকভির পদোন্নতি ঘটল। হলেন সংখ্যালঘু মন্ত্রকের স্বাধীন মন্ত্রী। আর কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবে বাবুলের থেকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক কেড়ে নিয়ে তাঁকে পাঠানো হল ভারী শিল্পে।

বাবুলের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে যে দায়িত্বই দিন, খুশি হয়ে তা নেবেন। অতীতে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ভারী শিল্পের দায়িত্বে ছিলেন। আজ সেই পদে এসে তিনি খুশি। আজ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে রদবদলের ঘোষণার পর বাবুল বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ‘বস’-এর (প্রধানমন্ত্রী) এখনও কথা হয়নি। কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারী শিল্পের মাধ্যমে হয়। এই মন্ত্রক পেয়ে আমি খুশি। নগরোন্নয়ন মন্ত্রকেও অনেক কাজ হয়েছে। ভারী শিল্পও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা থেকে দু’জন সাংসদের মধ্যে দু’জনেই এখন মন্ত্রী।’’

Advertisement

ঘরোয়া আলোচনায় দলের অনেকে অবশ্য বলছেন, বাবুলকে নিয়ে খুব একটি খুশি ছিলেন না তাঁর মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তার উপর বাবুলের কাজ করার ধরন নিয়েও অনেকের অসন্তোষ ছিল। এই মন্ত্রকের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে ভাবে তিনি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, রাজ্য রাজনীতিতে তার খেসারত দিতে হয়েছে। যদিও বাবুল বহু বার এই অভিযোগের জবাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা কোনও অন্যায় নয়। যে কেউ ডাকলেই তিনি যেতে রাজি। মোদী সরকারের সঙ্গে যাঁর আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক, সেই অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে এক মঞ্চে থেকে তিনি গানও গেয়েছেন।

নাজমা ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফার কথা বললেেও তাঁর বিদায় অর্থবহ অন্য দিক থেকে। এতে ৭৫ পেরনো কাউকে মন্ত্রিসভায় না রাখার অঘোষিত নীতি রূপায়ণে খানিকটা এগোলেন মোদী। যদিও উত্তরপ্রদেশের ভোটের কথা মাথায় রেখে ৭৫ পেরনো কলরাজ মিশ্রকে সরানোর ঝুঁকি তিনি নেননি। সংখ্যালঘু উন্নয়নে নাজমা ভাল কাজ করতে পারছেন না বলে মোদী বিভিন্ন বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে রাজ্যপাল করা নিয়ে জোর জল্পনা রয়েছে। বিজেপি সূত্র বলছে, নাজমা নিজে উপরাষ্ট্রপতি হতে চান। তবে সে নির্বাচন হবে আগামী বছর। নাজমা নিজে আজই বলে রেখেছেন, ‘‘নতুন যে কোনও দায়িত্ব নিতে আমি তৈরি আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন