ভাষা-সঙ্কট ছড়িয়ে ভুবনে, মত বিদ্বজ্জনদের

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহিদদের স্মরণ করল বরাক উপত্যকা। আজ শিলচরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে করিমগঞ্জের শম্ভুসাগর পার্কে শহিদবেদিতে স্কুলপড়ুয়ারা। ছবি: উত্তম মুহরী।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহিদদের স্মরণ করল বরাক উপত্যকা।

Advertisement

আজ শিলচরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র।

বরাক বঙ্গের অনুষ্ঠানে বক্তা ছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আলাউদ্দিন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বরাক উপত্যকাতেই শুধু ভাষা সঙ্কট নেই। তা রয়েছে ভুবনের অন্য অনেক জায়গাতেও। তা থেকে পরিত্রাণের উপায় হল, ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধর্মের উপর রাখা।’’

Advertisement

মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির অনুষ্ঠানে কুমারকান্তি দাস বলেন, ‘‘শিলচর পুরসভার বিভিন্ন ফর্মে বাংলায় লেখা থাকে না। সেগুলি লেখা হয় অসমিয়া বা ইংরেজিতে। শোধরানোর জায়গাটা আগে নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে।’’ সঙ্গীত, নৃত্যের মাধ্যমে দিনটি পালন করে সাংস্কৃতিক মঞ্চ।

বৃষ্টিতেও শহিদ স্মরণে ভাটা পড়ল না করিমগঞ্জে। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন শম্ভুসাগর পার্কে শহিদবেদিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বরাক উপত্যকা মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি মেন রোডে অস্থায়ী শহিদবেদিতে মাল্যদান করে। উভয় মঞ্চে হয় কবিতা, আবৃতি, গান। বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘ভাষার আন্দোলন এখন আত্মমর্যাদা রক্ষার সামিল। তাতে জড়িয়ে রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।’’

মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করে হাইলাকান্দিও। এ দিন ভোরে শহিদ স্মারকস্থলে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হয়। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কর্তারা শহিদবেদিতে মাল্যদান করেন। সুকোমল পালের সভাপতিত্বে হয় আলোচনাসভা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তনের ঢাকায় মাতৃভাষার জন্য জীবনদানের প্রসঙ্গের সঙ্গে উঠে আসে ১৯৬১ সালের ১৯ মে শিলচরে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ১১ শহিদের কথাও।

বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য দাবি করেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পাওয়ার নেপথ্যে ভারতের বিশেষ অবদান রয়েছে। বরাক বঙ্গের কর্তা সুদর্শন ভট্টাচার্য দু’দেশের শহিদ দিবসই তাঁর কাছে সমান মর্যাদার বলে মন্তব্য করেন। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী, সুরজিৎ দেব, জওহরলাল সেন, দেবদাস পুরকায়স্থ, ঋতা চন্দ, নীহারেন্দু চৌধুরী বর্তমানে বাংলা ভাষার সঙ্কটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

কাটলিছড়াতেও শহিদ স্মরণ, আলোচনা সভা হয়। ওই অনুষ্ঠানে বরাক বঙ্গের দীপককান্তি আইচ, প্রণবকান্তি দে বক্তব্য রাখেন। লালার মাতৃভাষা আদর্শ বিদ্যাপীঠ-সহ বিভিন্ন সংগঠন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন