বড়দিনে আলোর সাজ বরাকে

বড়দিনের আগে কয়েক দিন ধরেই শিলচর মেতেছিল উৎসবে। ক্রিসমাস ট্রি, সান্তাক্লজের পুতুল কিনতে ভিড় জমে দোকানে-বাজারে। সপ্তাহখানেক ধরে চলছিল ক্যারলে বাইবেলের প্রচার। গির্জা সাজছিল আলোর মালায়। শহরের শপিং-মলগুলিতে ‘সান্তা-দাদু’রা ঘুরে ঘুরে শিশুদের লজেন্স দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০৮
Share:

করিমগঞ্জের একটি গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা। শুক্রবার উত্তম মুহুরীর তোলা ছবি।

বড়দিনের আগে কয়েক দিন ধরেই শিলচর মেতেছিল উৎসবে। ক্রিসমাস ট্রি, সান্তাক্লজের পুতুল কিনতে ভিড় জমে দোকানে-বাজারে। সপ্তাহখানেক ধরে চলছিল ক্যারলে বাইবেলের প্রচার। গির্জা সাজছিল আলোর মালায়। শহরের শপিং-মলগুলিতে ‘সান্তা-দাদু’রা ঘুরে ঘুরে শিশুদের লজেন্স দিয়েছেন।

Advertisement

আজ সকালে শুরু হয় বড়দিনের প্রার্থনা। শিলচর শহরের প্রেসবেটেরিয়ান, ব্যাপটিস্ট, ক্যাথলিক— সমস্ত গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা ও বাইবেল পাঠের আয়োজন করা হয়। ছিল আলোচনা সভাও।

বিকেল হতেই আলোকমালায় ঝলমল করে সব গির্জা। আয়োজন হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা। তাঁরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রভু যিশুর কাছে সংসারের সুখ-শান্তি কামনা করেন। শহরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের বাড়িও আলোয় সেজে উঠেছে। সকাল থেকে চলছে শুভেচ্ছা বিনিময়— ‘মেরি ক্রিসমাস’। শিলচরে হিন্দুদের বড়দিনের উপাসনায় অংশগ্রহণকে অনেকে সম্প্রীতির উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের ভাবনায়— একে অপরের আনন্দোৎসবে সামিল হলে সামাজিক বাঁধন মজবুত হয়। গির্জা কর্তৃপক্ষ তাঁদের স্বাগত জানান। পুলিশ এ বারও গির্জাগুলির সামনে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল।

Advertisement

বড়দিনে সামিল ডিমা হাসাও জেলা। চার দিকে উৎসবের সুর। গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা। গত রাতে ১২টায় হাফলং শহরের ১০টি গির্জায় বড়দিনের প্রথম প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

আজ সকালেও বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা হয় গির্জাগুলিতে। ডিমা হাসাও জেলায় দুর্গাপুজো, দীপাবলী, ডিমাসা জনগোষ্ঠীর কৃষিভিত্তিক বুসুডিমা উৎসবের পর বড়দিন সব চেয়ে বড় উৎসব। পার্বত্য জেলা আজ ছিল উৎসবমুখর। শহরের গির্জাগুলি সেজেছিল আলোর মালায়। গত কাল সন্ধে থেকেই হাফলং শহর রঙিন হয়ে ওঠে। উৎসবের মধ্যে বিষাদের সুরও মিশেছে। অনেক দিন ধরেই উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের কর্মীরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। অনটনে পড়েছেন তাঁদের পরিবার। পরিষদ কর্মচারী সংস্থা আশা করেছিল, বড়দিনের আগে বকেয়া আট মাসের মধ্যে ৩-৪ মাসের বেতন মিলবে। মেলেনি। এক মাসের বেতন নিয়েই তাঁদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। পরিষদ কর্মীদের বক্তব্য, অনেক কর্মীর ব্যাঙ্কের ঋণ রয়েছে। এক মাসের বেতন ব্যাঙ্কের আসার পর, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অনেকের ঋণের টাকা কেটে রেখে দেয়। তাঁরা আরও বিপাকে ।

করিমগঞ্জও মেতে ওঠে বড়দিনে। ব্যাপটিস্ট চার্চে ছিল উৎসবের মেজাজ। আজ সকাল ১১টায় গির্জায় প্রার্থনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। করিমগঞ্জ ছাড়াও মিজোরাম থেকে অনেক খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী লোকেরা ভিড় জমান। প্রার্থনাসভায় বিশ্বশান্তি কামনা করা হয়। কচিকাঁচারা নাচগানে মেতে ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন