Mahakumbh Stampede

৩৭ নয়, কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে ৮১ জনের মৃত্যু! উত্তরপ্রদেশ সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানকে চ্যালেঞ্জ বিবিসি-র অন্তর্তদন্ত রিপোর্টে

বিবিসির অন্তর্তদন্তমূলক প্রতিবেদন অনুসারে, ২৬ জন মৃতের পরিবারের হাতে কার্যত চুপিসারে এক-পঞ্চমাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আবার ১৮ জন মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনও টাকাই দেওয়া হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ১৭:০০
Share:

কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনার পর হতাহতদের বার করে আনছে পুলিশ। গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। —ফাইল চিত্র।

গত জানুয়ারিতে কুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় আদতে কত জনের মৃত্যু হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল বিবিসি-র অন্তর্তদন্তমূলক একটি প্রতিবেদন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে পদপিষ্টের ঘটনায় ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অবশ্য বলছে, ওই ঘটনায় ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

বিবিসির অন্তর্তদন্তমূলক প্রতিবেদন অনুসারে, ২৬ জন মৃতের পরিবারের হাতে কার্যত চুপিসারে এক-পঞ্চমাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আবার ১৮ জন মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনও টাকাই দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৮১ বলে দাবি বিবিসির।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের মৃত ৩৭ জনের মধ্যে ৩৫ জনের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। এক জনের দেহ শনাক্ত করা যায়নি। আর এক জনের কোনও নিকটাত্মীয়ের খোঁজ না মেলায় ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দেওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার।

Advertisement

বিবিসির তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই ঘটনার পরে তারা ১১টি রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা ১০০টি এমন পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন, যাদের কেউ না কেউ কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, সংশয়াতীত ভাবেই জোরালো তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ৮১ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জনৈক তারা দেবীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। ৬২ বছরের এই বৃদ্ধা পুত্রের সঙ্গে কুম্ভে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমটির দাবি। উত্তরপ্রদেশ সরকার মৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ না-করায় সরকারের খাতায় তারা দেবী ‘মৃত’ কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে বৃদ্ধার ছেলের দাবি, গত ২৫ মার্চ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল তাঁদের বিহারের গোপালগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে এসেছে। পুলিশের তরফে নাকি জানানো হয়, ক্ষতিপূরণের বাকি অংশ (২০ লক্ষ টাকা) দিয়ে দেওয়া হবে।

গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যার ‘শাহি স্নান’ চলছিল। গঙ্গা, যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর সঙ্গমে স্নান করার জন্য প্রচুর পুণ্যার্থীর ভিড় হয়। সেই সময়ে পদপিষ্ট হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়। বিবিসির প্রতিবেদনে মৃতদের পরিবারের ক্ষোভের কথা তুলে ধরা হয়েছে। মৃতদের পরিজনদের একাংশের দাবি, পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেও মৃত্যুর কারণ হিসাবে রোগ বা অন্য কারণ দেখানো হচ্ছে। এই ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এর আগে কুম্ভমেলার এই ঘটনায় দেহ লোপাটের অভিযোগ তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, “কত হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে, কত লাশ গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement