দুর্ঘটনা বিতর্কে স্মৃতি

উনি সাহায্য করলে বেঁচে যেতেন বাবা

জেএনইউ বির্তকের রেশ কাটার আগেই নতুন বিতর্কে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০৪:২৫
Share:

জেএনইউ বির্তকের রেশ কাটার আগেই নতুন বিতর্কে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

Advertisement

স্মৃতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, বৃন্দাবন থেকে দিল্লি আসার পথে তাঁর কনভয়ের সঙ্গে এক মোটরবাইকের ধাক্কা লেগে আহত হন মথুরার এক চিকিৎসক। পরে তিনি মারা যান। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, আহত চিকিৎসকের মেয়ে স্মৃতির কাছে বারবার সাহায্য চাইলেও তাঁদের ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে চলে যান স্মৃতি। দু’টি অভিযোগই মিথ্যা, দাবি স্মৃতির। উত্তরপ্রদেশ পুলিশও স্মৃতিকে সমর্থন করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। ওই দিন রাতে বৃন্দাবনে চলা দু’দিনের যুব মোর্চা বৈঠকের শেষে দিল্লি ফিরছিলেন স্মৃতি। মন্ত্রী টুইটারে জানান, রাস্তায় তিনি দেখেন একটি মোটরবাইকের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা লেগেছে। আহত তিন আরোহী মাটিতে পড়ে। তাঁদের মধ্যে এক জন, রমেশ নাগর নামে এক চিকিৎসকের অবস্থা গুরুতর। স্মৃতির দাবি, তিনি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে নির্দেশ দেন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশও জানিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্স আসার পরেই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন স্মৃতি।

Advertisement

কিন্তু মৃত চিকিৎসকের মেয়ে শাণ্ডিলী আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে বাবার মৃত্যুর জন্য পরোক্ষে স্মৃতিকেই দায়ী করেছেন। শাণ্ডিলী জানিয়েছেন, মোটরবাইকে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা ও এক তুতো ভাই। তাঁর দাবি, স্মৃতির কনভয়ের ধাক্কায় তাঁরা তিন জনেই মাটিতে পড়ে যান। সব থেকে বেশি চোট লাগে তাঁর বাবা রমেশের। আহত রমেশ রাস্তা থেকে সরে আসার আগেই স্মৃতির কনভয়ের একটি গাড়ি এসে তাঁকে দ্বিতীয়বার ধাক্কা মারে। শাণ্ডিলীর কথায়, ‘‘এর পর কনভয়ের অন্য একটি গাড়ি থেকে নেমে আসেন স্মৃতি। বাবাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য চাই স্মৃতির কাছে। তিনি বলেন, সাহায্য পরে আসছে। উনি চাইল সাহায্য করতেই পারতেন। তা হলে হয়তো বাবা আজ বেঁচে থাকতেন।’’ রমেশের ছেলে অভিষেকেরও দাবি, ‘‘আমার বোন স্মৃতির কাছে হাত জোড় করে কাকুতি-মিনতি করেছিল। স্মৃতি দাঁড়াননি।’’

চলতি বছরের শুরু থেকেই বির্তকের কেন্দ্রবিন্দুতে স্মৃতি। প্রথমে হায়দরাবাদ, তার পরে জেএনইউ। তার মধ্যে সংসদ চলাকালীন এই নতুন বিতর্ক! তাঁর নির্দেশে সংবাদমাধ্যমকে বার বার ফোন করে ঘটনার ব্যাখ্যা দেয় মন্ত্রক।

তবে গোটা ঘটনায় স্মৃতির পাশে দাঁড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তারা জানিয়েছে, স্মৃতির কনভয় নয়, রমেশের গাড়িকে ধাক্কা মারে অন্য একটি গাড়ি। ধাক্কা মেরে ওই গাড়িটি দাঁড়িয়ে যেতেই পিছন থেকে আরও দু’টি গাড়ি পরপর এসে ধাক্কা মারে। তারপর স্মৃতির গাড়ি এসে পৌঁছয়। তখন বৃষ্টি পড়ছিল। তার মধ্যেই কী হয়েছে দেখার জন্য গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মন্ত্রী। তারপর কন্ট্রোল রুমে ফোন করে বিষয়টি জানান। অ্যাম্বুল্যান্স আসা পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থলেই ছিলেন স্মৃতি, দাবি দিল্লি পুলিশের।

গত বছর জুলাই মাসে বিজেপির আর এক সাংসদ হেমা মালিনীর গাড়ির সঙ্গে একটি গাড়ির ধাক্কায় মারা যায় দু’বছরের একটি বাচ্চা। জখম হন অভিনেত্রীও। তখন সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, অনেক অনুরোধ সত্ত্বেওে তিনি জখম বাচ্চাটিকে হাসপাতালে পাঠাতে কোনও সাহায্য করেননি। পুলিশের পাঠানো গাড়িতে নিজেই তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালে চলে যান। পরে টুইটারে এই দু’ঘটনার জন্য ‘বাচ্চার বাবার অসাবধানতা’কে দায়ী করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। যার ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় হেমা-নিন্দার পারদ আরও চড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন