ছবি: এএফপি।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তানের বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদীর তুরুপের তাস হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় ফেরার পরে সেই বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের অভাবই হবে মোদীর প্রধান চিন্তার কারণ।
নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিরক্ষাসচিবের পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন বাঙালি আইএএস সঞ্জয় মিত্র। প্রতিটি মন্ত্রকের মতো সাউথ ব্লকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও নিজস্ব অভাব ও সমস্যা নিয়ে হাজির হবে নতুন সরকারের কাছে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা খাতে অবিলম্বে কী কী দরকার, অবসরের আগে তার তালিকা চূড়ান্ত করে দিয়ে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের এই আইএএস।
এ বারের ভোটে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, রাফাল চুক্তি চূড়ান্ত হওয়া সত্ত্বেও বাহিনীতে যুদ্ধবিমানের অভাবই সব থেকে চিন্তার কারণ। ২০০২-এ বায়ুসেনার ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান ছিল। এখন যা অবস্থা, তাতে ২০২০-র মধ্যে বায়ুসেনার শক্তি ২৮ স্কোয়াড্রনে নেমে আসবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তি কমেছে জেনেই বালাকোটে হানার পরের দিন পাকিস্তানের বায়ুসেনা পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। একটি পাক যুদ্ধবিমান ভারতের এলাকায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। তা আটকানো গেলেও কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতের বায়ুসেনা যে ভাবে পাক বায়ুসেনাকে টক্কর দিত, এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই।
চিন্তা রয়েছে নৌসেনার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সাবমেরিন তথা ডুবোডাহাজ নিয়ে। নৌসেনার ২৪টি ডুবোজাহাজ প্রয়োজন। চলতি মাসের শুরুতেই প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্রর নেতৃত্বে নৌসেনার উচ্চপর্যায়ের একটি দল মুম্বইয়ে গিয়ে ডুবোজাহাজ নির্মাণ প্রকল্পের পর্যালোচনা করে এসেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সামনে মূলত দু’টি বিষয় তুলে ধরতে চাইছেন। এক, প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো। দুই, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নীতি অনুযায়ী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প সফল করা। প্রয়াত মনোহর পর্রীকর যে কোনও প্রতিরক্ষা বরাতে ভারতীয় সংস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সরকারের থেকে নির্দিষ্ট বরাতের অভাবের ফলে এখনও এই ক্ষেত্রে গতি আসেনি।