১০ ঘণ্টা হেঁটে পৌঁছলেন কাশ্মীরের রোগী 

গুলাম থাকেন অনন্তনাগের কাজ়িগুন্দে। কিডনির অসুখ আর শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়মিত আসতে হয় শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

নিষেধাজ্ঞার মরসুমে হাসপাতালের জন্য গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটেই হাসপাতালে যেতে হয়েছে। প্রতীকী ছবি।

শ্রীনগরের হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়েই আজ রীতিমতো হাঁফাচ্ছিলেন গুলাম মহম্মদ চেচি। তাড়াতাড়ি হুইলচেয়ার আনতে ছুটলেন তাঁর স্ত্রী শামিমা।

Advertisement

গুলাম থাকেন অনন্তনাগের কাজ়িগুন্দে। কিডনির অসুখ আর শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়মিত আসতে হয় শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে। হুইলচেয়ারে স্বামীকে বসিয়ে নিয়ে যেতে যেতে শামিমা বললেন, ‘‘শুক্রবার ওর অবস্থা হঠাৎ খারাপ হল। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। বারবার বলছে আমি হয়তো আর বাঁচব না।’’

কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞার মরসুমে হাসপাতালে আসার জন্য গাড়ি পাননি শামিমা। উপায় না থাকায় আজ ভোর পাঁচটায় স্বামীকে নিয়ে পায়ে হেঁটেই শ্রীনগরের দিকে রওনা দেন তিনি। কয়েক মিনিট চলার পরেই হাঁপিয়ে যান গুলাম। বারবার স্ত্রীকে অনুরোধ করেন ফিরে যেতে। শামিমার কথায়, ‘‘কিন্তু আমি ওর কথা শুনিনি। জানতাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে তবু ওর বাঁচার সম্ভাবনা আছে। ভেবেছিলাম রাস্তায় কোনও একটা গাড়িতে জায়গা পাব। কিন্তু রাস্তা পুরো ফাঁকা ছিল।’’

Advertisement

অবশেষে দুপুর তিনটে নাগাদ পায়ে হেঁটে হাসপাতালে পৌঁছন গুলাম-শামিমা। গুলামকে দ্রুত আপৎকালীন বিভাগে ভর্তি করা হয়।

গুলাম-শামিমা যাযাবর জনজাতির মানুষ। শামিমা বললেন, ‘‘সারা দিন পাহাড়ে হেঁটে বেড়ানোর অভ্যাস আমাদের আছে। কিন্তু অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা হেঁটে হাসপাতালে এ ভাবে বারবার আসা তো সম্ভব নয়।’’ গুলামের প্রতি সপ্তাহে ডায়ালিসিস প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাতে শামিমার চিন্তা আরও বেড়েছে। বললেন, ‘‘বাড়ি ফেরার কোনও একটা ব্যবস্থা করতে হবে। হেঁটে তো আর ফেরা যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন