(বাঁ দিকে) লালুপ্রসাদ যাদব এবং রাবড়ী দেবী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
২০ বছর পর ঠিকানা বদলে যাচ্ছে লালুপ্রসাদ যাদব এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের। মঙ্গলবার বিহারের এনডিএ সরকার লালুর পরিবারকে পটনার ১০, সার্কুলার রোডের বাংলো ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে লালুর পরিবারকে বিকল্প বাংলোও দেওয়া হচ্ছে। তাদের ৩৯, হার্ডিং রোডের বাংলোতে উঠে যেতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিহারের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছে লালুর দল আরজেডি। এমনকি পারিবারিক ঝামেলায় দল এবং বাড়ি ছাড়ার কথা ঘোষণা করা লালু-কন্যা রোহিণী আচার্যও বিষয়টি নিয়ে নীতীশ কুমারের সরকারকে তোপ দেগেছেন।
১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন রাবড়ী দেবী। ২০০৫ সালে আরজেডিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন নীতীশ কুমার। ১৫ বছর পর ক্ষমতাচ্যুত হয় লালুর দল। সেই সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীর জন্য ১০, সার্কুলার রোডের বাংলোটি বরাদ্দ করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ১, অ্যানে মার্গের সরকারি বাসভবনে থাকতেন রাবড়ী দেবী। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সরকারি ওই বাসভবনে থাকেন নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বেই রয়েছে ১০, সার্কুলার রোডের বাংলোটি। আরজেডি ক্ষমতার বৃত্তে থাক বা না-থাক, গত ২০ বছরে এর আগে কখনও ওই বাংলো থেকে লালুর পরিবারকে উঠে যেতে বলা হয়নি।
২০১৮ সাল থেকে বিহার আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের বিরোধী নেত্রী রাবড়ী দেবী। সেই পদাধিকারবলেই লালু-পত্নী ওই বাংলোর দাবিদার বলে দাবি করেছে আরজেডির একাংশ। এই প্রসঙ্গে দলের নেতা শক্তিসিংহ যাদব বলেন, “রাবড়ী দেবী বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিধান পরিষদের বর্তমান বিরোধী নেত্রী। কোন নিয়মে তাঁর বাসস্থান বদলে দেওয়া হল?” সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে নীতীশকে আক্রমণ করে রোহিণী লিখেছেন, “এটাই ‘সুশাসনবাবু’র উন্নয়নের মডেল। তাঁর কাজ বহু মানুষের মসীহা লালুপ্রসাদ যাদবকে অপমান করা।” তার পরেই রোহিণীর সংযোজন, “ওরা বাড়ি থেকে তাড়াতে পারবে, কিন্তু লালুপ্রসাদকে বিহারের মানুষের হৃদয় থেকে কী ভাবে সরাবে?”
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সরকারের নির্দেশে বাংলো ছেড়ে নতুন ঠিকানায় উঠে যেতেই হবে লালু-রাবড়ীদের। এ ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ করার সুযোগ তাঁদের হাতে খুব বেশি নেই। কারণ ২০১৯ সালে পটনা হাই কোর্ট স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের সব প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সুযোগসুবিধা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তার পরেও অবশ্য এত দিন ১০, সার্কুলার রোডেই সপরিবারে থাকছিলেন রাবড়ী দেবী।