গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সিন্ধু জলচুক্তি মেনে ভারত যদি পাকিস্তানকে তার প্রাপ্য না দেয় তবে তা ‘নিয়ে নেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিলাবল ভুট্টো জারদারি। পাক শাসকজোটের সহযোগী পিপিপি (পাকিস্তান পিপল্স পার্টি) নেতার হুঁশিয়ারি, ‘‘ভারতের সামনে এখন ন্যায্য ভাবে জল ভাগাভাগি করার বিকল্প খোলা রয়েছে। অথবা আমরা ছ’টি (সিন্ধু নদী ব্যবস্থার অন্তর্গত) নদীর জলই আমাদের কাছে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করব।’’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার জানিয়েছিলেন, সংঘর্ষবিরতি হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে কখনওই সিন্ধু জলচুক্তি পুনর্বহাল করবে না ভারত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একটি খাল খনন করে পাকিস্তানে প্রবাহিত জল রাজস্থানে নিয়ে যাব। পাকিস্তান অন্যায় ভাবে যে জল পাচ্ছে, তা আর পাবে না।’’ শাহের ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সোমবার পাক পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ওই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাবল।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পরে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছিল নয়াদিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ চেয়ে সক্রিয় হয়েছে পাকিস্তান। পাশাপাশি, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদীর জল না পেলে ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি তাতে কর্ণপাত করেনি।
প্রসঙ্গত, টানা ন’বছর আলোচনার পরে ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু নদীর জলবণ্টন সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছিল। পাকিস্তানের করাচি শহরে গিয়ে এই চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন নেহরু। ওই চুক্তি অনুযায়ী, পূর্ব দিকের তিনটি নদী, অর্থাৎ বিপাশা (বিয়াস), ইরাবতী (রাভি) ও শতদ্রুর (সতলুজ়) জলের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতের। অন্য দিকে, পশ্চিমমুখী সিন্ধু (ইন্ডাস), চন্দ্রভাগা (চেনাব) ও বিতস্তার (ঝিলম) জল ব্যবহার করতে পারবে পাকিস্তান। জলের নিরিখে সিন্ধু এবং তার শাখা ও উপনদী মিলিয়ে ৩০ শতাংশ ভারত ও ৭০ শতাংশ পাকিস্তান পাবে বলে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নয়াদিল্লির অবস্থানে স্পষ্ট, ওই চুক্তি আর পুনর্বহাল হবে না।