গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পশ্চিম এশিয়ার শান্তির খোঁজ ‘বিশ বাঁও জলে’। শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইরান এবং ইজ়রায়েল, দু’দেশের প্রতিনিধিই যুদ্ধের জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে লড়াই চালিয়ে যেতে তাঁরা বদ্ধপরিকর।
সংঘাতের এই আবহে আমেরিকাকে শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইউরোপ সফরে গিয়ে এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমেরিকা যদি ইজ়রায়েলের সঙ্গে মিলে আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে যোগ দেয়, তবে পশ্চিম এশিয়ার মার্কিন সেনাঘাঁটিগুলিতে প্রতিশোধমূলক প্রত্যাঘাত চালাতে আমরা দ্বিধা করব না। আত্মরক্ষা প্রতিটি দেশেরই মৌলিক অধিকার।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের প্রতিনিধি আমির সঈদ ইরাভানি বলেন, ‘‘ইজ়রায়েল একতরফা ভাবে, অতর্কিতে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমরা তাই প্রত্যাঘাত করেছি।’’ প্যালেস্টাইনি ভূখণ্ড গাজ়ায় গত দেড় বছর ইজ়রায়েলি সেনার হামলার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘ইজ়রায়েল সব সময়ই অন্য দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করে। সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।’’ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ কথা বলার সময় ইজ়রায়েলি হামলায় নিহত ইরানি শিশুদের ছবি হাতে নিয়ে তুলে ধরেন তিনি।
অন্য দিকে, ইজ়রায়েলের প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, ‘‘ইরান এখন আক্রান্ত সেজে নাটক করছে।’’ তাঁর অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জনমত উপেক্ষা করে গণবিধ্বংসী অস্ত্র বানিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি বিঘ্নিত করছে ইরান। ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত বন্ধ করার এবং সঙ্কটের কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানানো হলেও তার রূপরেখা নির্ধারণের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কোনও ঐকমত্য হয়নি।
প্রসঙ্গত, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হানার আশঙ্কা রয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার এমন ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কয়েকটি সেনাঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও রণতরী সরিয়ে নিতে ইতিমধ্যেই শুরু করেছে আমেরিকা! পশ্চিম এশিয়ায় সবচেয়ে বড় মার্কিন সেনাঘাঁটি আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে (যা কাতারের রাজধানী দোহার অদূরে অবস্থিত) সাময়িক ভাবে অসামরিক কর্মীদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইরান ফৌজ মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলা চালালে সর্বাত্মক যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা।