অগপ-সঙ্গও অনিশ্চিত
BJP

একক ক্ষমতার লক্ষ্যে শরিক ছাড়ল বিজেপি

এপ্রিলে বিটিসি স্বশাসিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে, বিপিএফের শাসনকালের মেয়াদ না-বাড়িয়ে রাজ্যপালের শাসনাধীনে আনা হয় বড়োভূমি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষামাত্র। বিটিসি নির্বাচনের আগেই ভেঙে যাচ্ছে বিজেপি ও বিপিএফের মিত্রতা। নেডা চেয়ারম্যান তথা রাজ্য সরকারের মুখপাত্র, অর্থ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়ে দিলেন, বড়োভূমির নির্বাচনে জিততে মুখোমুখি যুদ্ধে নেমেছে বিজেপি ও বিপিএফ। আর কোনও মিত্রতার প্রশ্নই নেই।

Advertisement

এপ্রিলে বিটিসি স্বশাসিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে, বিপিএফের শাসনকালের মেয়াদ না-বাড়িয়ে রাজ্যপালের শাসনাধীনে আনা হয় বড়োভূমি। তখন থেকেই মিত্রতা ভঙ্গের সূত্রপাত। গত কয়েক দিন ধরে বিটিসির ভোট প্রচারে হিমন্ত ও হাগ্রামা নাগাড়ে তীক্ষ্ণ ভাষায় পরস্পরকে আক্রমণ চালিয়েছেন। হিমন্ত মিত্রতা ভঙ্গের কথা ঘোষণার পরেই আজ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, হিমন্ত ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎকুমার দাস দিল্লি যান। দলীয় সূত্রে খবর, সেখানেই বিপিএফের সঙ্গে মিত্রতা ছিন্ন করার ঘোষণায় সিলমোহর পড়বে। সেই সঙ্গে বিজেপি-অগপ মিত্রতা আদৌ থাকবে কি না তা নিয়েও সিদ্ধান্ত হবে।

অসমের রাজনীতিতে বিপিএফ দীর্ঘদিনের কিংমেকার। ১২ জন বিধায়ক ও তিন মন্ত্রী-সহ হাগ্রামা মহিলারির দল বিপিএফ গত তিন দফায় কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৬ সালে তারা বিজেপির হাত ধরে। সেই সময় নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা ‘অটুট মিত্রতার’ কথা বললেও মাত্র পাঁচ বছরেই মিত্রতা শেষ!

Advertisement

কারণ, একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপির আপাতত সরকার ধরে রাখতে বিপিএফের ১২ জন বিধায়কের সাহায্য দরকার নেই। বরং তারা বড়োভূমিতে পুরো দমে লড়তে নেমে যতটা বেশি সম্ভব আসন পেতে চাইছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রঞ্জিৎকুমার জানান, বিধানসভা ভোটেও বিপিএফের হাতে থাকা ১২টি আসনেই প্রার্থী দিতে তৈরি দল।

সেই সঙ্গে প্রমোদ বড়োর নেতৃত্বাধীন ইউপিপিএলের সঙ্গে তাদের সমঝোতার রাস্তাও খোলা। তৃতীয় বড়ো শান্তি চুক্তিতে প্রমোদ বড়ো, হাগ্রামা ও এনডিএফবির চারটি শাখার মাথারা সই করলেও চুক্তির মাধ্যমে বিজেপি প্রাক্তন আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়োর শক্তি বৃদ্ধি করেছে। যাতে বড়োভূমিতে হাগ্রামার একচ্ছত্র আধিপত্য খর্ব করা যায়।

এ দিকে শুধু বিপিএফই নয়, অসম গণ পরিষদের সঙ্গেও আসন্ন ভোট জোট বজায় রাখবে কি না বিজেপি, তা-ও নিশ্চিত নয়। কারণ দলের অধিকাংশ নেতাই একলা লড়ার নীতিতে বিশ্বাসী। আসু, এজেওয়াইসিপির তৈরি নতুন রাজনৈতিক দল, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির রাজনৈতিক দল ও অন্য আঞ্চলিক দলের প্রতিষ্ঠার জেরে এমনিতেই অগপ তাদের আগের ১৪টি আসন ধরে রাখতে পারবে কি না সন্দেহ। তাই বিজেপিও অগপর জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন আসনগুলিতে নিজেদের প্রার্থী দিতে চাইছে।

সিএএ নিয়ে আন্দোলনের সময় বিজেপি জোট ছেড়েও ফের ক্ষমতার লোভে শাসক জোটে ফিরে যাওয়ায় এমনিতেই অগপর ভাবমূর্তিতে ধস নেমেছে। তাদের আঞ্চলিকতাবাদের আদর্শও আর নেই। সেই সঙ্গে দলের ভিতরে বিভাজন স্পষ্ট। অথচ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাদের বড় দলের সাহায্য লাগবেই। তাই সম্ভবত অগপর একাধিক নেতামন্ত্রী নিজের দলের ভবিষ্যতে ভরসা না-রেখে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। হিমন্তবিশ্বও গত কাল বলেছেন, অগপ-বিজেপি বলে কোনও কথা নেই। জয়ের সম্ভাবনা বেশি এমন ব্যক্তিকেই প্রার্থী করা হবে। বিজেপি সাংসদ তথা রাষ্ট্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ শইকিয়া বলেন, রাজনীতির প্রয়োজনে জোট বা মিত্রতার শর্তে অদল-বদল হতেই পারে। কোন কেন্দ্রে কার জেতার সম্ভাবনা রয়েছে সেটাই এখন একমাত্র বিবেচ্য বিষয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement