বিহারে দলিতদের সঙ্গে টানতে প্রায়-নির্বাসন থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে সঞ্জয় পাশোয়ানকে ফিরিয়ে আনছে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিধান পরিষদের নির্বাচনে দলের তিনটি আসনে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডের পাশপাশি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঞ্জয় পাশোয়ানকে মনোনীত করল বিজেপি।
গত কালই দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি সঞ্জয়ের নাম ঘোষণা করেছে। প্রথম দু’জনের নাম প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু সঞ্জয় পাশোয়ানের নাম ঘোষণা হতেই বিহারের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, আরএসএসের পরামর্শেই সঞ্জয়কে ফের বিজেপির রাজনীতিতে সক্রিয় করা হল। তাঁকে নীতীশ মন্ত্রিসভাতেও নিয়ে আসা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।
বিহারের নওয়াদার প্রাক্তন সাংসদ সঞ্জয় পাশোয়ান বাজপেয়ী সরকারের সামাজিক ন্যায়, মানব সম্পদ এবং যোগাযোগ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দলের প্রাক্তন সভাপতি জনা কৃষ্ণমূর্তির সময়ে জাতীয় সম্পাদকের পদেও ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে বিহারের সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম উঠে আসে। কিন্তু উচ্চবর্ণের নেতাদের বিরোধিতায় পিছিয়ে যান কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ক্ষুব্ধ সঞ্জয় বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। পরে লোক জনশক্তি পার্টি এবং আরজেডিতেও যান সঙ্ঘের এই ‘প্রচারক’। ২০০৮ সালে তাঁকে ফের দলে ফেরান বিহারের তঘনকার ভারপ্রাপ্ত নেতা কলরাজ মিশ্র এবং রাজ্য সভাপতি রাধামোহন সিংহ। ২০১৪ সালে দলের জাতীয় তফসিলি মোর্চার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। পরে জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যও করা হয়। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ায় পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ন্যায় ও শ্রম বিভাগের এই দলিত অধ্যাপক ‘কবীর কে লোগ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে রাজ্য জুড়ে দলিত সংগঠনে নামেন।
সম্প্রতি দেশ জুড়ে, বিশেষ করে বিহারে দলিত আন্দোলনে চাপের মুখে রয়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় সঞ্জয় পাশোয়ানকে বিধান পরিষদের সদস্য করে দলিত সমাজকে বার্তা দিল বিজেপি। এর পিছনে অবশ্যই সঙ্ঘের প্রবল চাপ রয়েছে। কারণ তাঁরা মনে করেন রাজ্যে দলিতদের মধ্যে সঞ্জয় পাশোয়ানের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। গ্রহণযোগ্যতা সে ভাবে নেই। আগামী কাল বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সৌদান সিংহ পটনা আসছেন। দলের সাংগঠনিক সভাতে রাজ্য সভাপতি নিত্যানন্দ রায় এবং সঞ্জয় পাশোয়ানকেই তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি।