সদ্য চার দিন আগেই নবান্নে গিয়েছিলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি-বিরোধী জোটের চাকা গড়াতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে। আজ তেলঙ্গানায় রাজ্যসভা ভোটের আগে সেই চন্দ্রশেখরের দলের প্রার্থীদের জয় আরও মসৃণ করাতে উদ্যোগী হলেন বিজেপি নেতৃত্ব। ভোট হয়েছে তিনটি আসনে। তিনটিই পেয়েছে চন্দ্রশেখরের তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি(টিআরএস)।
যে অমিত শাহ অন্য রাজ্যে একটি বাড়তি আসন ছিনিয়ে নেওয়ার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেননি, গত কাল রাতে তিনিই তেলঙ্গানার বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন ভোটদানে বিরত থাকতে। তেলঙ্গানার চার আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রার্থী দিয়েছিল টিআরএস। সংখ্যার হিসেবে জয় প্রায় নিশ্চিতও ছিল। তবুও লড়াইয়ে থাকার জন্য রাহুল গাঁধীও এক জনকে দাঁড় করান। কিন্তু চন্দ্রশেখরের প্রার্থীর জয়কে মসৃণ করতে বিজেপিই আসর থেকে সরে দাঁড়াল। আর তাতে টিআরএসের তিন প্রার্থীর জয়ও আরও অনায়াস হয়ে গেল। চতুর্থ আসনে হারলেন কংগ্রেস প্রার্থী।
রাজনীতির অনেক লোকজনই তাই মনে করছেন, চন্দ্রশেখরের সঙ্গে মমতাদের ওই কেন্দ্রীয় মোর্চা যতটা না বিজেপি-বিরোধী, তার থেকেও বেশি কংগ্রেসের বিরোধী। বিজেপিই আসলে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরাতে এই কৌশল নিচ্ছে। তা না হলে শুধু কেসিআর নয়, সমর্থন তুলে নেওয়ার পর চন্দ্রবাবু নায়ডুরর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে বিজেপি। ঘটনাচক্রে আজ তেলঙ্গানায় বিজেপির পাশাপাশি তেলুগু দেশমও ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। টিআরএসের প্রার্থীদের সমর্থন করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দলও। যিনি প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধী অবস্থান নিলেও তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপিকেই পরোক্ষে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে অনেক বার। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটেও ওয়েইসির দলকে দিয়ে বিজেপি-বিরোধী ভোট কাটা হয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন।
যদিও দিল্লিতে বিজেপি নেতারা বলছেন, তেলঙ্গানায় বিজেপির মাত্র পাঁচ জন বিধায়ক আছেন। আর টিআরএসের ৯০-এর কাছাকাছি। ফলে বিজেপির এই সংখ্যা দিয়ে কোনও ভাবেই লড়াইয়ের সম্ভাবনা ছিল না। সে কারণেই রাজ্য নেতৃত্বকে ভোটদানে বিরত থাকার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
কংগ্রেসের বক্তব্য, লড়াইয়ের সম্ভাবনা না থাকলেও অন্য রাজ্যে তো কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেননি বিজেপি সভাপতি! গুজরাতে আহমেদ পটেলকে হারাতে মাটি কামড়ে লড়েছিলেন। তেলঙ্গানায় কেন এত সদয় হল বিজেপি? বিরোধী জোট যাতে দানা বাঁধতে না পারে, তারই চাল এটি!