মনের কথা বাক্সে ফেলুন, চাইছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে পছন্দসই সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার বাইরে একটিও সাংবাদিক বৈঠক করেননি নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৮
Share:

—ছবি পিটিআই।

চাকরি চাই? রামমন্দির নিয়ে আইন? কৃষি সঙ্কট থেকে মুক্তি? প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার?

Advertisement

সব প্রশ্নের অভিন্ন ‘সমাধান’ আছে অমিত শাহের কাছে: ‘‘আপনার প্রস্তাব বাক্সে ফেলুন।’’

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে পছন্দসই সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার বাইরে একটিও সাংবাদিক বৈঠক করেননি নরেন্দ্র মোদী। পাঁচ বছর ধরে একতরফা নিজের ‘মনের কথা’ই শুনিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ভোট আসতে এ বার মানুষেরও ‘মনের কথা’ শুনতে বেরোচ্ছে তাঁর দল। দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে ঘটা করে আজ অমিত শাহ ঘোষণা করলেন, এক মাসে ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবে বিজেপি। ৩০০ ‘হাইটেক এলইডি’ রথ ঘুরবে গোটা দেশে। ৭৫০০ ‘বাক্স’ রাখা হবে প্রস্তাব সংগ্রহের জন্য। সকলের ‘মনের কথা’ শুনেই তৈরি হবে বিজেপির ইস্তাহার।

Advertisement

নামে মত নেওয়া, আদতে প্রচারই। আর তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারত কে মন কি বাত, মোদী কে সাথ’। সঙ্গে স্লোগান, ‘কাম করে জো, উম্মীদ উসী সে হো’ (যিনি কাজ করেন, প্রত্যাশাও তাঁর থেকেই হোক)। মত নেওয়া হবে ‘মিসড কল’ দিয়েও। আগে যে ‘মিসড কল’-এর মাধ্যমে ১১ কোটি ‘সদস্য’ হয়েছে বিজেপির। সে ১১ কোটির দাবি অমিত আজ আবার করলেও বন্ধ ঘরে আগেই বলেছেন যে, সংখ্যাটি আরও ২ কোটি কম।

আরও পড়ুন: আড্ডায় পড়ুয়াদের খাবার বেড়ে দিলেন রাহুল নিজেই

পাঁচ বছর নিজের ‘মনের কথা’ বলে এখন কেন জনতার কথা শুনতে চান মোদী? অমিতের যুক্তি, ‘‘দশ কোটি মানুষ তো খুশি হবেন। অন্তত তাঁদের কেউ জিজ্ঞাসা করল, এত দিন সেটিই তো কেউ করেনি।’’ বিজেপি সভাপতি দিল্লিতে যখন এই ঘোষণা করছেন, জম্মু-কাশ্মীর থেকে মোদীর টুইট, ‘‘এটি অভিনব উদ্যোগ। সবাই যোগ দিন।’’ কংগ্রেস বলছে, রাহুল গাঁধী তো এই প্রক্রিয়া আগেই শুরু করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একতরফা ‘মন কি বাত’ নয়, মানুষের ‘দিল কি বাত’ শুনবেন। পি চিদম্বরমের নেতৃত্বে ইস্তাহার কমিটি দেড়শো বৈঠক করে ফেলেছে। বিজেপিই এখন ‘নকল’ করছে রাহুলকে।

বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, গোটা ভাবনাটাই প্রধানমন্ত্রীর নিজের। ঘোষণা করালেন সেনাপতি অমিতকে দিয়ে। ইস্তাহার কমিটির প্রধান হিসেবে আনা হয়েছিল রাজনাথ সিংহকে। অমিতের পরে বলতে উঠেই রাজনাথ খোঁচাটা দিলেন, ‘‘সভাপতি বলার পরে ‘হাতি কে পাও মে সবকা পাও’।’’ মানে, বড় বলার পরে ছোটদেরও বলা হয়ে যায়। অমিত মুচকি হাসলেন। নিজের বক্তৃতায় রাজনাথ শোনালেন, চাকরি, কৃষি,

শ্রমিকদের জন্য আরও কী কী করা দরকার। বললেন, প্রধানমন্ত্রী ‘অনেক’ করলেও তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তেলের দাম কমানো নিয়ে প্রশংসার ছলে মোদীর সঙ্গে তুলনা টেনে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও।

প্রশ্নোত্তর পর্বে আর রাজনাথকে সুযোগ না দিয়ে নিজের হাতেই মাইক রাখলেন অমিত। তাঁর পরামর্শ মাফিক পাঁচতারা হোটেলেরই কর্মী মোহনচন্দ্র পাণ্ডে বাক্সে ফেললেন তাঁর ‘মনের কথা’— ভোটের আগেই রামমন্দির আইন হোক। অমিত বললেন, সরকার ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিতর্কিত জমির বাইরে বাকিটা ফেরত দেওয়া হোক। অন্যান্য দলও যেন আর বাধা না দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন