কৃষকদের লাল মিছিলে কপালে ভাঁজ বিজেপির

পশ্চিমবঙ্গ বা কেরল নয়। ত্রিপুরার দুর্গে ধস নামার পরে এ দেশে বামেরা কোণঠাসা। তখন বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রেই সিপিএমের কৃষক সভা এ হেন আন্দোলন খাড়া করে ফেলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৬
Share:

আন্দোলন: ঋণ মকুবের দাবিতে পথে কৃষকেরা। ঠাণেতে। ছবি: পিটিআই।

নাসিক থেকে ৬ মার্চ যখন কৃষকদের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখনই মিছিলে চাষিদের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার। এখন তা ৩০ হাজারে ছাপিয়ে গিয়েছে। সকলের কাঁধেই হাজারে হাজারে কাস্তে-হাতুড়ি আঁকা লাল ঝাণ্ডা উড়ছে। প্রায় ২০০ কিলোমিটার হেঁটে কৃষকেরা যখন রবিবার মুম্বইয়ে পৌঁছবেন, সংখ্যাটা তখন ৫০ হাজারে পৌঁছে যাবে বলে অনুমান। ঋণ মকুব, ফসলের ন্যায্য দাম, লাঙল যার, জমি তার থেকে আদিবাসীদের অরণ্যের জমির উপরে অধিকারের মতো একগুচ্ছ দাবি নিয়ে সোমবার মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভবন ঘেরাও করবেন কৃষকরা।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ বা কেরল নয়। ত্রিপুরার দুর্গে ধস নামার পরে এ দেশে বামেরা কোণঠাসা। তখন বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রেই সিপিএমের কৃষক সভা এ হেন আন্দোলন খাড়া করে ফেলেছে।

টনক নড়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের। সোমবার মুম্বইতে আজাদ ময়দানের কাছেই কৃষকদের পদযাত্রা আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু যে ভাবে চাষিরা কৃষক সভার ঝান্ডা হাতে রাস্তায় নেমেছেন, তাতে উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব। বুলেট-ট্রেন-সুপার হাইওয়ের মতো প্রকল্প করে বিজেপি সরকার চমক দিতে চাইছিল। সেই প্রকল্পের নামেই জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতায় চাষিরা পথে নেমেছেন। মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার আগেই ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করে দিয়েছিল। কিন্তু কৃষক সভার যুগ্ম সম্পাদক বিজু কৃষ্ণনের যুক্তি, ‘‘সরকার এমন সব শর্ত রেখেছে যে ঋণের খুব সামান্য টাকাই মকুব হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে ফসল বিমা যোজনা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হলেও ক্ষতিপূরণ মিলছে না। বুলেট ট্রেন-সুপার হাইওয়ের নামে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

দাবিদাওয়া কী কী

• কৃষকদের সম্পূর্ণ ঋণ মকুব

• ফসলের ন্যূনতম দাম হবে চাষের পুরো খরচের দেড় গুণ

• অরণ্যের অধিকার আইনের রূপায়ণ

• নদী সংযুক্তি প্রস্তাব বাতিল করে আদিবাসীদের জমি রক্ষা

• খরা কবলিত এলাকায় জলের বন্দোবস্ত

• আদিবাসী-চাষিদের জমি দখল বন্ধ করা

• লাঙল যার, জমি তার

• গরিব কৃষক ও ক্ষেত মজুরদের জন্য পেনশন

• পোকামাকড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতিপূরণ

কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা করিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের উদ্যোগে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে আন্দোলনে সাফল্য মিলেছে। এ বার মহারাষ্ট্রে আন্দোলনকে সমর্থন করতে বাধ্য হয়েছে বিরোধী দলগুলি।

কিন্তু এই আন্দোলন থেকে কি সিপিএম ভোটে ফায়দা তুলতে পারবে? বিজু কৃষ্ণনের জবাব, ‘‘আমরা ভালো ফল করব কি না জানি না। কিন্তু বিজেপির হারের পথ যে মসৃণ করা যাবে, সেটা নিশ্চিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement