বাংলায় ৩৪! শুনে হতবাক মোদীর ভক্তকুল

হাঁফ ছাড়ছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু জয়ের কৃতিত্ব কী কী ভাবে নেওয়া হবে?

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

গুজরাতের ফল তখন স্পষ্ট হয়েছে। হাত থেকে ফস্কে গিয়েছে সেঞ্চুরিটি। তবু রক্ষা। বিজেপি জিতল তো বটে!

Advertisement

হাঁফ ছাড়ছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু জয়ের কৃতিত্ব কী কী ভাবে নেওয়া হবে?

গত কাল গুজরাত জয়ের দিন এই প্রশ্নেই উঠে এল বাংলা। বিজেপি দফতরের বৈঠকে তখন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, সুষমা স্বরাজ, পীযূষ গয়াল, মুরলীধর রাওরা। নিজেদের মধ্যে অনেকেই বলাবলি করছেন, সকালে তো উল্টেই যাচ্ছিল ছবিটা। তবে অমিত শাহরা অভয় দিলেন, এই প্রথম বিজেপির সঙ্গে গোটা বিরোধী জোটের সরাসরি লড়াই। তাতেও জিতল বিজেপি। কম কথা নয়।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের মতে, এরই মধ্যে এক মন্ত্রী বলে বসলেন, ‘‘গুজরাতে প্রধানমন্ত্রী আর একটি রেকর্ড গড়লেন। টানা ২২ বছর ক্ষমতায়। আর আগামী ৫ বছর ধরলে ২৭ বছর। আর পশ্চিমবঙ্গে বামেরা কাটিয়েছেন ২৪ বছর।’’ আর এক নেতা কথা কেটে বললেন, ‘‘২৪ নয়, ২৫ হবে। ৫ বছর করে পাঁচ বার।’’ আলোচনা শুনে খটকা লাগল এক নেতার। সংখ্যাটা আসলে কি একটু বেশি নয়?

আরও পড়ুন: রামমন্দির পরিকল্পনা ঘোষণা বছর শেষে

ঘটনাচক্রে বাংলার নেতা রাহুল সিংহ সেই সময় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি দফতরেই। তাঁকেই তলব করলেন অমিত শাহ। প্রশ্ন করলেন, কত বছর বামেরা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় ছিল? রাহুল জবাব দিলেন, ‘‘৩৪ বছর।’’ কিছুক্ষণ আগেই বিজেপি নেতাদের দল প্রধানমন্ত্রীর পালকে একটি রেকর্ড যোগ করেছিলেন। এখন ৩৪ বছর শুনে হতবাক। ‘‘পাক্কা?’’ পাল্টা প্রশ্ন এল। জবাব এল, ‘‘হ্যাঁ’’।

তা হলে সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফস্কে গেল নতুন রেকর্ডটাও? হার মানতে তবু নারাজ কিছু নেতা। মুরলীধর রাও বললেন, ‘‘প্রথম পাঁচ বছর বাদ দিতে হবে। কারণ, জনতা পার্টির সঙ্গে মিলে বামেরা সরকার গড়েছিলেন।’’ কিন্তু বাস্তব তা বলছে না। এই নিয়েই চলল আরও কয়েক মিনিটে গবেষণা। তার পর হাল ছাড়লেন। না হলে বাইরে এসে নতুন রেকর্ডের ঘোষণাও করে দিতেন তাঁরা।

অমিত শাহ শুধু রাহুল সিংহকে বললেন, ‘‘এর পর বাংলার জন্যও তৈরি হোন। প্রচার যা হওয়ার হবে, আসল জোর দিতে হবে বুথে। সেখানে দশ জন লোক, সেখানে ৫০টি লোক হোক। যেখানে একটিও হয়নি, সেখানে কমপক্ষে এক জন থাকতে হবে। আর যত লোক ভিন্‌ দল থেকে আসতে চাইছেন, নিয়ে নিন। বিশিষ্ট লোকদেরও কাছে টানুন।’’

কিন্তু গুজরাত জয়ের দিন যে বাংলা নিয়ে এত আগ্রহ অমিত শাহের, সে রাজ্যের ইতিহাস নিয়েই এত কম জ্ঞান তাঁর দলের? যে বিজেপি নেতারা কথায় কথায় ‘ডিজিটাল ভারত’-এর কথা বলেন, একটু গুগ্‌ল ঘাঁটলেই তো শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রাজ্যের কথা জানতে পারতেন না কি?

প্রশ্নগুলি থেকেই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন