BJP

Farm Laws: বিরোধীদের লক্ষ্য ‘রাজনীতি’, তোপ বিজেপি নেতৃত্বের

সরকার বিরোধীদের ভয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। এ নিয়ে দফায় দফায় সংসদের গাঁধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান সাংসদেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরেও সংসদে বিরোধী দলগুলির ক্ষোভ আসলে ‘রাজনৈতিক’। যার সঙ্গে কৃষক স্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই বলে আজ কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ দলগুলির বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তি দিয়ে সরব হলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, কৃষকদের অন্যান্য দাবিগুলি নিয়ে খুব দ্রুত বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

আজ সংসদের উভয় কক্ষেই কোনও আলোচনা ছাড়াই বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাশ হয়ে যায়। সরকারের ওই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে বিল নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। কিন্তু গোড়া থেকেই বিল নিয়ে আলোচনার পথে হাঁটতে রাজি ছিলেন না নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল ঘিরে আলোচনা হলে বিরোধীরা যে শাসক শিবিরকে সংসদের কক্ষে দাঁড়িয়ে তীব্র আক্রমণ শানাবেন তা প্রত্যাশিত ছিল বিজেপির কাছে। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, এমনিতেই আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাথা ঝুঁকিয়েছে দল। তার পরে আবার সংসদে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধীদের আক্রমণের সুযোগ করে দিলে তা পাঁচ রাজ্যে ভোটের আগে রাজনৈতিক ভাবে আত্মহত্যার শামিল হত। সেই কারণেই ওই বিল ঘিরে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল। দলের পক্ষে যুক্তিতে বলা হয়েছে, ওই আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বিল প্রত্যাহারের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তাই আর আজ আলাদা করে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই।

সরকার বিরোধীদের ভয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। এ নিয়ে দফায় দফায় সংসদের গাঁধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান সাংসদেরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কথায়, ‘‘সরকার অন্যায় করেছে। তাই এখন পালাচ্ছে।’’ পাল্টা যুক্তিতে কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘বিরোধীদের দাবি ছিল কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। আজ ওই আইন প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। তা সত্ত্বেও বিরোধীরা সংসদে ঝামেলা পাকাচ্ছেন। আসলে বিরোধীদের উদ্দেশ্য কী?’’ বিজেপির আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির কথায়, ‘‘কৃষক স্বার্থের পরিবর্তে আসলে রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই ওই আন্দোলনে নেমেছিলেন যে বিরোধীরা তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ বিজেপি শিবিরের মতে, দেরিতে হলেও কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিরোধীদের পালের হাওয়া অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে। বিরোধীদের লক্ষ্য ছিল আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন পর্যন্ত বিষয়টি জিইয়ে রেখে শাসক শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলা। কিন্তু মোদী সরকারের আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে উল্টে চাপে পড়ে গিয়েছেন বিরোধীরা। তাই আলোচনা চেয়ে বিষয়টিকে কোনও ভাবে জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বিরোধী নেতৃত্ব। শাসক শিবিরের আশঙ্কা, বাকি দিনগুলিতে আলোচনার দাবিতে সংসদ অধিবেশন ভণ্ডুল করতে এগোতে পারে কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেসের মতো দলগুলি।

Advertisement

তবে আইন প্রত্যাহার হলেই যে কৃষকেরা আন্দোলন বন্ধ করে দিয়ে ঘরে ফিরে যাবেন না তা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতারা। তাই দলের এখন প্রধান লক্ষ্য হল, রাজনৈতিক দলের হাত থেকে কৃষক আন্দোলনকে বার করে নিয়ে আসা। যাতে বিরোধীরা এর থেকে আর ফায়দা তুলতে না পারেন। তাই ঠিক হয়েছে আগামী দিনে ওই আইন প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে একেবারে তৃণমূল স্তরে প্রচারে জোর দেবেন বিজেপি। কৃষকদের দাবি, ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্যকে আইনি রূপ দিতে দ্রুত কমিটি গঠন করে, আগামী সাত-দশ দিনের মধ্যে কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষক আন্দোলনে জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগও যাতে দ্রুত প্রত্যাহার হয় সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। বিজেপি যে কৃষকদের পাশে রয়েছে, সেই বার্তা দিতেই মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন