বিজেপির অভিযোগ, লাল কেল্লা ‘দত্তক’ দেওয়া ঘিরে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে হইচই করছে।
বাণিজ্যিক গোষ্ঠীর হাতে লাল কেল্লা ‘দত্তক’ দেওয়া ঘিরে দেশ জুড়ে বিতর্ক। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্টকে হাতিয়ার করে পাল্টা আক্রমণে নামল বিজেপি। তাদের বক্তব্য, পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে ঐতিহাসিক সৌধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ‘দত্তক’ দেওয়ার নীতিকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। ওই কমিটির চেয়ারম্যান তৃণমূলের। কমিটিতে আছেন কংগ্রেস সাংসদেরা। বিজেপির অভিযোগ, এখন রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে হইচই করছে।
দু’মাস আগে সংসদীয় কমিটির তৈরি করা ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক সৌধ দত্তক দেওয়ার উদ্যোগ সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে একটি স্বাগত জানানোর মতো পদক্ষেপ। কমিটির সুপারিশ, ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’র (সিএসআর) নীতি মেনে বিভিন্ন বৃহৎ সংস্থাকে ঐতিহাসিক সৌধ দত্তক নেওয়ার জন্য বলতে পারে সরকার। তবে ওই সৌধগুলিতে পরিকাঠামো ও ন্যূনতম পরিষেবা উন্নয়নের রূপরেখা মন্ত্রক বা সরকারি সংস্থা তৈরি করে দেবে, এমন কথাও বলা হয়েছিল রিপোর্টে। বলা হয়েছিল, পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি বেসরকারি সংস্থার হাতে পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
বিতর্কের মুখে বিজেপি ওই রিপোর্টের স্বাগত জানানোর অংশটিকেই সামনে আনছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু যেমন রবিবার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘দলের স্বার্থ বড় না জাতীয় স্বার্থ?’’ এমন আক্রমণে ঈষৎ বিড়়ম্বনায় তৃণমূলও। তবে তাদের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ‘মিথ্যা’ প্রচার করছে।
কমিটির চেয়ারম্যান মুখ খোলেননি। তবে তৃণমূলের এক প্রথম সারির সাংসদের বক্তব্য, ‘‘ঐতিহাসিক সৌধে শৌচালয় বা পানীয় জলের ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছিল সংসদীয় কমিটি। কোনও সদস্যই সৌধ বেচে দেওয়ার পক্ষে কথা বলেননি! অথচ সরকার ডালমিয়া গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতাপত্র সই করে লাল কেল্লা কার্যত ‘লিজ’ দিয়ে দিয়েছে! সমঝোতাপত্র দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, লাল কেল্লাকে প্রায় ডিজনিল্যান্ড বানানোর চেষ্টা হচ্ছে!’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজুকে পাল্টা বিঁধে কমিটির সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘আপনিই বরং বিজেপির রাজনীতি করছেন! আমি তিন বছর ধরে কমিটির সদস্য। কমিটি কখনও জাতীয় সম্পদ বেচে দিতে বলেনি! পরিকল্পনা ও রূপায়ণের মধ্যে বিস্তর ফারাক করা হয়েছে।’’