রাহুল গাঁধী।—ফাইল চিত্র।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে টুইটারে ‘জেটলাই’ বলে বিদ্রুপ করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। শনিবার সেই নোটিস বেঙ্কাইয়া পাঠিয়ে দিলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনকে।
সম্প্রতি জেটলিকে কটাক্ষ করে রাহুল এক টুইট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রিয় মিস্টার জেট-লাই, ভারতকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ যে প্রধানমন্ত্রী যা বলেন, কখনও তা সঠিক অর্থে বলেন না এবং যা সঠিক অর্থ করেন তা বলেন না।’ এর পরেই রাহুলের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ ভুপেন্দ্র যাদব। সেই অভিযোগপত্রই এ বার লোকসভায় পাঠালেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। যে হেতু রাহুল রাজ্যসভার নন লোকসভার সদস্য, তাই সেখানেই তা পাঠানো হল।
গত মাসে গুজরাতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ এনেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি টানা সংসদ অচল থাকে। মোদীকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে অথবা সংসদে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলে কংগ্রেস। শেষে সংসদের বাইরে দু’তরফের এক আলোচনায় ঠিক হয়, মোদীর মন্তব্য নিয়ে তাঁর হয়ে রাজ্যসভায় কথা বলবেন অর্থমন্ত্রী। এর পর গত ২৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য কার্যত ফিরিয়ে নিয়ে জেটলি বলেছিলেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতির দেশভক্তি নিয়ে আমাদের কোনও সংশয় নেই, বরং শ্রদ্ধাবোধই আছে।’’
আরও পড়ুন
মোদীর সংস্কারে কুপোকাত বৃদ্ধি
মোদীর মন্তব্য জেটলি খণ্ডানোর পর রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদও জানিয়ে দেন, ভোটের সময় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে এমন কোনও মন্তব্য থেকেও তাঁরা দূরত্ব বজায় রাখছেন। কিন্তু, ওই দিন রাতেই জেটলিকে কটাক্ষ করে ওই টুইট করেন রাহুল গাঁধী। এর পরেই রাহুলের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন অরুণ জেটলি। ঘনিষ্ঠ মহলে জেটলি বলেছিলেন, রাহুলের বিদ্রুপে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের বিশ্বাসযোগ্যতাই খর্ব হয়েছে। তাঁর কথাতেই সরকারপক্ষ যেমন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য কার্যত প্রত্যাহার করেছে, তেমনই আজাদও নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে যাবতীয় ‘কুকথা’ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে।
আরও পড়ুন
রোবট মানুষ সোফিয়া এসেছিল শাড়ি পরে
এর পরেই সাংসদ যাদব রাজ্যসভায় অভিযোগ করেন, এমন ব্যঙ্গ অরুণ জেটলির অধিকার ভঙ্গের সামিল। কিন্তু বেঙ্কাইয়া জানান, রাহুল গাঁধী রাজ্যসভার সদস্য নন। ভূপেন্দ্র তখন ১৯৫৪ সালে এন সি চট্টোপাধ্যায়ের নজির দেখিয়ে বলেন, সংসদের দুই সভা মিলিয়ে একটি যৌথ কমিটি অনায়াসে বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। এর পরেই রাহুলের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ চেয়ারম্যান গ্রহণ করেন। সেই নোটিস-ই এ দিন লোকসভার স্পিকারের কাছে পাঠানো হল।