মা ও ছেলের যুগলবন্দিতে বিদ্ধ বিজেপি

দীর্ঘদিন পর সংসদের ভিতরে রুদ্রমূর্তিতে মা। ছেলেকে পাশে বসিয়ে আক্রমণের কৌশল নিয়ে দ্রুত আলোচনাও সেরে নিলেন। তার কিছু পরে সংসদের বাইরে আক্রমণাত্মক ছেলে। বহু দিন পরে লোকসভার ভিতরে-বাইরে সনিয়া এবং রাহুল গাঁধীর এই যুগলবন্দি দেখে উৎসাহিত কংগ্রেস শিবির। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

দীর্ঘদিন পর সংসদের ভিতরে রুদ্রমূর্তিতে মা। ছেলেকে পাশে বসিয়ে আক্রমণের কৌশল নিয়ে দ্রুত আলোচনাও সেরে নিলেন। তার কিছু পরে সংসদের বাইরে আক্রমণাত্মক ছেলে। বহু দিন পরে লোকসভার ভিতরে-বাইরে সনিয়া এবং রাহুল গাঁধীর এই যুগলবন্দি দেখে উৎসাহিত কংগ্রেস শিবির।

Advertisement

শীতকালীন অধিবেশন যে এ বার মোটের উপর অচলই থাকবে, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক দিনের মত আজও বারবার মুলতুবির পরে বন্ধ হয়ে যায় সংসদের দু’টি কক্ষই। এই আবহে আজ সকালে রাফাল নিয়ে বাদানুবাদের সময় আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। বিজেপির স্লোগানে যখন কংগ্রেসের বক্তা মল্লিকার্জুন খড়গের বক্তব্য প্রায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, সে সময় নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়ান কংগ্রেস নেত্রী। স্পিকারের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বিহিত চাইতে থাকেন। স্পিকারের ভূমিকায় দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ সনিয়া।

রাফাল-রায় নিয়ে গত কাল থেকেই সংসদে হট্টগোল করছে বিজেপি। আজও দিনের শুরু থেকেই ‘রাহুল গাঁধী মাফি মাঙ্গে’ প্ল্যাকার্ড হাতে চিৎকার করতে থাকেন বিজেপি সাংসদেরা। পাল্টা চিৎকার শুরু হয় কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদদের। তাঁদের স্লোগান, ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, মোদী সরকার চোর হ্যায়’! এই চিৎকারের মধ্যেই বলার পালা আসে খড়গের। কিন্তু তিনি বলতে ওঠার সময়ে চিৎকারের জেরে মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দৃশ্যতই ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন সনিয়া। জানতে চান, এ সব কী হচ্ছে। কিছু পরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী লোকসভায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজিত ভাবে তাঁকে কাছে ডেকে নেন সনিয়া। মা-ছেলেকে পাশাপাশি বসে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়।

Advertisement

বিকেলে সংসদ থেকে বেরোনোর মুখে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল। রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া সরকারি হলফনামায় ‘টাইপো’-র প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, ‘‘আপনাদের বলেছিলাম যে, মাটি ফুঁড়ে এখন অনেক টাইপোর প্রসঙ্গ উঠবে! এ তো সবে শুরু! জেপিসি, রাফাল, কৃষি ঋণ মকুব, নোটবাতিল সবেতেই টাইপো দেখতে পাবেন! আসলে দেশে যা হচ্ছে, তা হল, কৃষক-ছোট দোকানি-সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া। আগেই বলেছি নোটবাতিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। জয় শাহ, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের বন্ধুদের পকেট ভর্তি করার জন্য গরিব মানুষের টাকা কেড়ে নেওয়া হয়েছে নোটবাতিল করে।’’

দিল্লিতে সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে রাহুল যখন তোপ দাগছেন, তখন মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কংগ্রেসকে পাল্টা নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী। রাফাল থেকে কংগ্রেসের দুর্নীতি— সব কিছু নিয়েই সরব মোদী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে সাফ রায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ওই কাজ (রাফাল চুক্তি) সততা এবং স্বচ্ছতা বজায় রেখে করা হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমাদের মানসিকতাই এমন যে, সরকারের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই তা বিশ্বাস করে নিই।’’ পাশাপাশি অগুস্তা প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘চার বছর আগে কেউ ভাবতেও পারেননি যে, অগুস্তা হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারির প্রধান ব্যক্তি ত্রিশ্চিয়ান মিশেলকে ভারতে নিয়ে আসা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন