—প্রতীকী চিত্র।
অবিকল যেন পশ্চিমবঙ্গের ২০১১-র ভোটের আগেকার প্রতিচ্ছবি। ভোটের মুখে সেই দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ, সেই দেহ ঘিরে রাজনীতি, সেই রাস্তায় ধর্না, বাংলার পুরনো সব ছবিই দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের মুখে।
শাসক সিপিএমের বিরুদ্ধে বিজেপি-র অভিযোগ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারের বিরুদ্ধে যা হামেশাই করতেন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগকে জোরালো করার মতো হাতিয়ারও পেয়ে গিয়ে সোমবার ত্রিপুরায় রাস্তায় নেমেছিল বিজেপি।
রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির ১১ নম্বর বুথ কমিটির সভাপতি মধুসূদন দেব নিখোঁজ ছিলেন কয়েক দিন। রবিবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় পঞ্চবটী এলাকায়। তার পরেই সোমবার মধুসূদনবাবুর দেহ নিয়ে বিজেপি ধর্না শুরু করে আগরতলায় রাজ্য পুলিশের সদর দফতরের সামনে। বেশ কিছু ক্ষণ ধর্না বিক্ষোভ চলার পরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের মাধ্যমে ত্রিপুরা পুলিশের ডিআইজি অরিন্দম নাথ বিজেপি কর্মীদের আশ্বাস দেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। আশ্বাস পেয়ে ধর্না তুলে নিলেও বিজেপি নেতারা জানিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, এই খুনখারাপির বদলা ভোটে নেওয়া হবে। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি স্বয়ং অমিত শাহ এ দিন ছিলেন আগরতলায়। তিনিও বলেছেন, ‘‘সিপিএম হিংসার রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। ভোটে মানুষ সিপিএমকে উৎখাত করবেন। আমরা হিংসামুক্ত ত্রিপুরা গড়ব।’’
আরও পড়ুন: ‘নীতি থাকলে কি এমন জোট করত বিজেপি?’
সিপিএম অবশ্য দাবি করেছে, বিজেপি যে কোনও ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগাচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর এ দিন নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ত্রিপুরার জন্য যে ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশ করেছেন তাতে প্রকাশক এবং মুদ্রকের নাম নেই। যা নির্বাচনীবিধি ভঙ্গের সামিল।
দু’দিন আগে ত্রিপুরায় হয়ে গিয়েছে পোস্টাল ব্যালটের ভোট। বিজেপি তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে কী ভাবে পোস্টাল ব্যালটের ছবি ব্যবহার করছে, কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন বিজনবাবু। এ ছাড়াও তাঁদের অভিযোগ, শাহের সভার আগে বিজেপিতে যোগদানের জন্য কিছু লোককে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। কমিশন আশ্বাস দিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।