সমর্থন-ভিত অটুট লালুর, দেখাল বিহার

শুধু ভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখাই নয়, আগামী দিনে নীতীশ কুমার-নরেন্দ্র মোদী জোটকে যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে তিনি ফেলবেনও তারও ইঙ্গিত মিলল এই উপনির্বাচনেই।

Advertisement

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

নরেন্দ্র মোদী এবং লালুপ্রসাদ যাদব। —ফাইল চিত্র।

দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি লালুপ্রসাদ। তবে তাতেও তাঁর জনপ্রিয়তায় যে ভাঁটা পড়েনি তা প্রমাণ হয়ে গেল বিহারের একটি লোকসভা ও দু’টি বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফলে। লালুর দুর্গ অটুটই রইল। শুধু ভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখাই নয়, আগামী দিনে নীতীশ কুমার-নরেন্দ্র মোদী জোটকে যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে তিনি ফেলবেনও তারও ইঙ্গিত মিলল এই উপনির্বাচনেই।

Advertisement

আর জয়ের পরে তাঁর টুইটার থেকে বার্তা ভেসে এল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে। মমতার এই উপনির্বাচনের ফলাফলে ‘শেষের শুরু’ দেখেছেন। টুইটারেই অভিনন্দন জানিয়েছেন লালুকে। উত্তরে লালু লিখলেন, “ধন্যবাদ দিদি। আমরা একসঙ্গে লড়াই করছি। লড়াই করব। আমরা জিতব।”

আজ বিহারের একটি লোকসভা এবং দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের ফলাফল আপাত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, স্থিতাবস্থাই বজায় রইল। যে যেখানে ছিলেন সেখানেই রইলেন। কিন্তু বিহার রাজনীতির গত কয়েক মাসের উত্থান-পতনকে মাথায় রাখলে দেখা যাবে, মহাজোট ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছেন নীতীশ কুমার। মহাজোট সরকার ফেলে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে গড়েছেন বিজেপি-জেডিইউ জোট সরকার। ইতিমধ্যে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির একটার পর একটা মামলায় ধাক্কা খেয়েছেন লালুপ্রসাদ। পরের পর দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিনি সাজা কাটছেন রাঁচীর জেলে বসে। এরই পাশাপাশি, হিসেব-বহির্ভূত আয়ের একাধিক মামলায় জেরবার লালুপ্রসাদের পরিবার। রাজ্য-রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আরজেডির পক্ষে ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। জয়ের পরে উচ্ছ্বসিত আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, “বিহারের মানুষ নীতীশ কুমারকে মুখের মতো জবাব দিয়েছেন। আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে মহাজোট তৈরি করেই লড়াই করা হবে।” তবে যাঁর প্রতি কটাক্ষ সেই নীতীশও কম যান না! নিজের টুইটারে তিন আসনের জয়ী প্রার্থীদের দলমত নির্বিশেষেই ‘বাধাই’ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: জোট-পথে মমতাকে পাশে চাইছেন রাহুল

আরজেডি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহম্মদ তসলিমুদ্দিনের মৃত্যুতে খালি হওয়া অররিয়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সোজা দল পাল্টে আরজেডির টিকিটে নির্বাচনে লড়েন তসলিমুদ্দিনের ছেলে তথা জোকিহাটের ‘জেডিইউ বিধায়ক’ সরফরাজ আলম। এবং জিতেছেন। আরজেডি বিধায়ক মুন্দ্রিকা যাদবের মৃত্যুতে খালি হয় জহানাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র। সেই কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হন মুন্দ্রিকার ছেলে সুরজ যাদব ওরফে সানডে। তিনি জেডিইউ প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপি প্রার্থীর মৃত্যুতে খালি হওয়া ভভুয়া আসনে তাঁর স্ত্রী, বিজেপি প্রার্থী রিঙ্কি রানি জিতেছেন।

আরও পড়ুন: যোগীর ঘরে সপা-র বাসা

তবে এই ফলাফলে প্রকাশ্যে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বিজেপি বা জেডিইউ নেতৃত্ব। ‘স্থিতাবস্থা রক্ষার’ কথাই বলছেন তাঁরা। তবে একান্ত আলোচনায় দু’তরফের নেতারাই স্বীকার করছেন, বিহার রাজনীতিতে এখনও প্রাসঙ্গিক চরিত্র ‘লালুপ্রসাদ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement