Bihar Assembly Election 2025

আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা সফল হয়েছে বিহারে, জানিয়ে দিল বিজেপি, মানলেন চিরাগও

চিরাগ-‘সঙ্কট’ মিটলেও আর এক দলিত নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝীর ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম)-র সঙ্গে এখনও রফা চূড়ান্ত হয়নি এনডিএ-র।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ২২:০৫
Share:

(বাঁ দিকে) অমিত শাহ এবং চিরাগ পাসোয়ান (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিহারের বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানের দল ‘লোক জনশক্তি পার্টি-রামবিলাস’ (এলজেপিআর)-এর সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে বলে দাবি করল বিজেপি। আর নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দলের সেই দাবিতে সায় দিলেন চিরাগও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিহারের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই গিয়েছিলেন চিরাগের বাড়িতে। সেখানে দুই নেতার রূদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিত্যানন্দ বলেন, ‘‘ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’’ পাশে দাঁড়ানো চিরাগ তাতে সায় দেন। এর পরে বিহারের ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান নিত্যানন্দ। এর পরে বিজেপি সূত্রে জানা যায়, ২২টি আসন নিয়ে দু’পক্ষের ঐকমত্য হয়েছে। তা ছাড়া চিরাগ আরও যে চারটি আসনের দাবি করেছেন, সে বিষয়ে বিবেচনা চলছে।

লালুপ্রসাদ যাদব-নীতীশ কুমারের সমসাময়িক হলেও বরাবরই জাতীয় রাজনীতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন চিরাগের পিতা রামবিলাস। বাকি দু’জন যখন রাজ্য-রাজনীতিতে ক্ষমতা দখলের জন্য সক্রিয়, তখন রামবিলাস বার বার জোট বদলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বেই মনোনিবেশ করেছেন। কিন্তু ২০২০ সালে রামবিলাসের প্রয়াণের পরে বিহারের বিধানসভা ভোটে চিরাগের নেতৃত্বে অখণ্ড এলজেপি আলাদা ভাবে ভোটে লড়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি তিনি। নিশানা করেছিলেন নীতীশের জেডিইউকে। মোট ১৩৪ আসনে লড়ে মাত্র একটিতে জিতলেও সাড়ে পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল তাঁর দল।

Advertisement

এর পরে ২০২১-এর মধ্যপর্বে এলজেপিতে ভাঙন ধরেছিল। সে সময় বিজেপি এবং জেডিইউ দাঁড়িয়েছিল চিরাগের কাকা পশুপতি পারসের পাশে। সে সময় পারস-সহ লোকসভায় দলের পাঁচ সাংসদ এক দিকে ছিলেন। অন্য দিকে, একা রামবিলাস-পুত্র চিরাগ। সে সময় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ‘এলজেপি সংসদীয় দলের’ স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পারসের গোষ্ঠী ‘রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি’কে। এনডিএ জোটে তাঁকে স্থান দিয়েছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চিরাগকে ব্রাত্য করে পারসকে কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু দলিত পাসোয়ান জনগোষ্ঠীর ভোট চিরাগের দিকে ঝুঁকেছে আঁচ পেয়ে গত লোকসভা ভোটের আগে পারসকে ব্রাত্য করে চিরাগের সঙ্গে জোট করে বিজেপি-জেডিইউ। এলজেপির জন্য বরাদ্দ পাঁচটি আসনই চিরাগ গোষ্ঠীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সবক’টিতেই জেতে এলজেপি (রামবিলাস)।

এ বারও চিরাগ আবার একক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বিহার রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারের বৈঠক ‘জট কাটার’ ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। তবে আর এক দলিত নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝীর ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম)-র সঙ্গে এখনও রফা চূড়ান্ত হয়নি এনডিএ-র। প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন গত ৬ অক্টোবর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে জানিয়েছে, এ বার বিহারে দু’দফায় ভোট হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৬ নভেম্বর। ওই দফায় ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ১০ অক্টোবর সেই সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। তা যাচাইয়ের জন্য ১৮ তারিখ অবধি সময় পাওয়া যাবে। প্রার্থীরা নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হবে ১১ নভেম্বর। দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ওই দফার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে ১৩ অক্টোবর। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা চাইলে নাম তুলে নিতে পারবেন। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement