টেন্ডার না ডেকেই শিলান্যাস, নীতীশকে খোঁচা বিজেপির

ভোট-বাজারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটির ‘প্যাকেজ’-এর পাল্টা জবাব দিলেন নীতীশ কুমার। আজ বিহারের আটটি দফতরের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৫
Share:

সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে নীতীশ কুমার। রবিবার পটনায়। — নিজস্ব চিত্র।

ভোট-বাজারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটির ‘প্যাকেজ’-এর পাল্টা জবাব দিলেন নীতীশ কুমার।

Advertisement

আজ বিহারের আটটি দফতরের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

ভোটযুদ্ধে নীতীশকে একটুকুও জমি ছাড়তে নারাজ বিজেপি, টেন্ডার না ডেকেই কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করার অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছে!

Advertisement

এ দিন নীতীশ যে সব প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, তার মধ্যে অন্যতম পটনা সিটির কাচ্চি দরগাহ থেকে বৈশালি জেলার বিদুপুর পর্যন্ত গঙ্গার উপরে চার লেনের রাস্তা-সহ সেতু নির্মাণ। সরকারি সূত্রে খবর, সে জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারও ওই প্রকল্পে ২ হাজার কোটি টাকা দেবে। প্রশাসনিক সূত্রেই খবর মিলেছে, ওই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নকশাই এখনও তৈরি হয়নি। ডাকা হয়নি টেন্ডারও।

সে সবের আগেই কী ভাবে সেই প্রকল্পের শিলান্যাস করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। নীতীশ সরকারের মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংহ ওরফে লালন সিংহ বলেন, ‘‘শীঘ্রই টেন্ডার ডাকা হবে।’’ তবে তারিখ নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি।

রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীলকুমার মোদী এ নিয়ে নীতীশকে বিঁধেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগামী বার নীতীশজি আর সরকারে ফিরবেন না। তাই এখনই সব কিছুর শিলান্যাস করে নিচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের জন্য ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সেই প্যাকেজেই গঙ্গার উপরে ৫ হাজার কোটি টাকা সেতু-সহ ছ’লেনের রাস্তা তৈরি কথা রয়েছে।

এ দিনের অনুষ্ঠানে নীতীশের মন্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া প্যাকেজের আসল সত্যি কিছুদিনের মধ্যেই সামনে আসবে!’’

এ দিনই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী পীযূষ গয়াল ও পরিকল্পনা বিকাশ মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডি পটনা ও সারন জেলার ৩৬টি গ্রামে কেন্দ্রের টাকায় বৈদ্যুতিকরণ প্রকল্পের সূচনা করেন। পীযূষ বলেন, ‘‘কেন্দ্র নিজের খরচায় রাজ্যে ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিচ্ছে। রাজ্যের উৎপাদন শূন্যতে পৌঁছেছে। গত ১০ বছরে বিহারে ৬২৮ বিদ্যুৎ পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ১০ কোটি বাসিন্দার রাজ্যে এই সংখ্যা অত্যন্ত কম।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যকে সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে জনপ্রতি বিদ্যুতের চাহিদা ২০০ ইউনিট। সেখানে জাতীয় চাহিদা প্রায় ১ হাজার ইউনিট। বিদ্যুতের চাহিদা বাড়াতে হবে। সে জন্য রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিতে হবে। অথচ রাজ্য সরকার এখনও জমি চিহ্নিত করতে পারেনি।’’ বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সাহায্যে রাজ্যের ২৫ হাজার যুবককে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির উপযুক্ত করা হবে বলে জানান রাজীব রুডি।

নীতীশ অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বলেই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বৈদ্যুতিকরণের ওই প্রকল্প আগে রাজীব গাঁধীর নামে ছিল। বর্তমান সরকার তার নাম পাল্টেছে। আগে কেন্দ্র সরকার ৯০ শতাংশ এবং রাজ্য সরকার ১০ শতাংশ খরচ দিত। এখন কেন্দ্র সরকার ৬০ শতাংশ এবং রাজ্য সরকার ৪০ শতাংশ খরচ বহন করছে। প্রকল্পটি একই রয়েছে। শুধু নামটাই পাল্টেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন