পরিস্থিতি প্রতিকূল। ভোটের বাক্সে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে জনতা। বর্ধিত তেলের দামে ‘অচ্ছে দিনে’র স্বপ্নও ক্রমশ ফিকে। এ দিকে হাতে মাত্র এক বছর সময়। তাই জনমানসের কাছে শাসক শিবিরের ইতিবাচক ছবিটি তুলে ধরতে নতুন করে ‘জনসম্পর্ক’ অভিযান শুরু করল বিজেপি। যে পরিকল্পনায় অংশ নিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে একেবারে বুথ স্তরের সাধারণ কর্মীও। প্রত্যেকের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ পর্যায়ে অন্তত ৫০ জন বিজেপি-বিরোধী ব্যক্তিকে দলের কর্মসূচিতে সামিল করে জনভিত্তি বাড়ানোর। আগামিকাল প্রাক্তন সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগের গুরুগ্রামের বাড়ি থেকে এই অভিযান শুরু করবেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকের ব্যর্থতার পরে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়াটাও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের অস্বস্তির বড় কারণ। লোকসভার আগে বিজেপির পক্ষে হাওয়া তুলতে তাই নতুন করে শুরু হচ্ছে ‘জনসম্পর্ক’ কর্মসূচি। মূলত যাঁরা মানসিক ভাবে বিজেপি- বিরোধী তাঁদের কাছে পৌঁছতেই ওই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। নতুন করে জনসমর্থন বাড়াতেই ওই প্রকল্প নিয়েছে দল। জোর দেওয়া হয়েছে বিশিষ্ট জনেদের পাশে পাওয়ার চেষ্টাকে। মোদী জমানার শুরুর দিকে পরপর অসহিষ্ণুতার ঘটনায় পুরস্কার ফিরিয়ে দেন একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁদের পাশে পেতেও সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে বিজেপি-বিরোধী বিদ্বজ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে। তাঁদের বিরোধিতার কারণ বুঝে তা নিরসন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিতেও বলা হয়েছে। তেলের বর্ধিত দামে অখুশি মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে পাশে পেতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফলের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরতে বলা হয়েছে দলীয় কর্মীদের।
গত লোকসভায় দলিত সমাজ মোদীকে ঢালাও সমর্থন দিলেও, গত চার বছরে দলিত নিগ্রহের একাধিক ঘটনায় তাঁরা ক্রমশ সরে গিয়েছেন। দলের বিশ্লেষণ, জাতপাতের ভিত্তিতে যাতে সংঘর্ষ লেগেই থাকে সে জন্য নিয়মিত ভাবে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন বিরোধীরা। বিভেদের রাজনীতি থেকে ফায়দা নিচ্ছেন রাহুল গাঁধী-মায়াবতীরা। ওই ফাঁদে পা না দিয়ে বরং বিজেপি কর্মীদের আরও মানবিক ভাবে দলিত সমাজের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। দলিত নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ফরমানও জারি করেছে দল।