পিসি-ভাইপোকে হারাল বিজেপি উত্তরপ্রদেশে

মায়াবতী-অখিলেশের জোট কৌশলে ক’দিন আগেই লোকসভা উপনির্বাচনে হাসি মিলিয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথের। আজ তা ফিরে এল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:০২
Share:

উত্তর প্রদেশে উপনির্বাচনে হারের বদলা রাজ্যসভায় নিল বিজেপি।

গোরক্ষপুর-ফুলপুরে হারের বদলা নিল বিজেপি। তবে বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে!

Advertisement

মায়াবতী-অখিলেশের জোট কৌশলে ক’দিন আগেই লোকসভা উপনির্বাচনে হাসি মিলিয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথের। আজ তা ফিরে এল।

এ দফায় ১৭টি রাজ্য থেকে ৫৫ জন নির্বাচিত হলেন রাজ্যসভায়। কিন্তু ১০ রাজ্যের ৩৩টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। আজ ভোট হল ৭ রাজ্যের ২৬টি আসনে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে দশটি। এবং যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের দশ নম্বর আসনটির দিকেই নজর ছিল সবার।

Advertisement

কারণটা লোকসভার উপনির্বাচনে ‘বুয়া-বাবুয়া’ (পিসি-ভাইপো) জোট। যে জোট আশা জাগিয়েছে বিরোধী শিবিরে। বিরোধী নেতারা বলছেন, মোদীকে হারাতে জোটই মন্ত্র। সেই লক্ষ্যে তৎপরতাও চলছে কী কংগ্রেসে, কী আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে।

আরও পড়ুন: ‘ভোটের সময়ই হাত কাঁপে! অন্য সময় তো হয় না’

প্রথম সুযোগেই তাই জোটকে ধাক্কা দেওয়া লক্ষ্য ছিল বিজেপির। রাজ্যসভার ভোটেও সপার সমর্থন নিয়ে দশম আসনে প্রার্থী দিয়েছিলেন মায়াবতী। তাঁকে হারাতে মরিয়া ছিলেন অমিত শাহ। সেই কাজে সফল হয়েছেন। কিন্তু ঘাম ঝরাতে হয়েছে বিস্তর। সপা-বিএসপি থেকে বিধায়ক ভাঙিয়ে, তাদের জেলবন্দি বিধায়কদের ভোট দিতে আসতে না দিয়েও বিজেপি প্রার্থী অনিল অগ্রবালকে প্রথম পছন্দের ভোটে জেতাতে পারেননি অমিত। অনিল জিতেছেন দ্বিতীয় পছন্দের ভোটে। দিনভর নাটকের শেষে সব মিলিয়ে উত্তরপ্রদেশে ৯টি আসন পেল বিজেপি। বাকি আসনটিতে জিতলেন সপা-র জয়া বচ্চন।

উপনির্বাচনে হারের পর মোদী মুখ খোলেননি। আজ তড়িঘড়ি টুইট করে জয়ীদের অভিনন্দন জানালেন। আর যোগী মুখ খুলেই ফাটল ধরাতে চাইলেন মায়া-অখিলেশ জোটে। বললেন, সপা সুবিধাবাদী। উপনির্বাচনে মায়ার সমর্থন নিয়ে নিজের প্রার্থী জিতিয়েছে। কিন্তু মায়ার প্রার্থীকে জেতাল না। কিন্তু মায়ার সেনাপতি সতীশ মিশ্র বলেন, ‘‘অর্থবল ও প্রশাসন প্রয়োগ করে ভোটে জিতেছে বিজেপি। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বিধায়কদের জেল থেকে আসতে দেয়নি।’’ অনিলের বিরুদ্ধে বিএসপি প্রার্থী ছিলেন ভীমরাও অম্বেডকর। বাবাসাহেবের সমনামী এক জনকে হারিয়ে বিজেপি আসলে ফের তাদের দলিত-বিরোধী মুখই তুলে ধরল বলে অভিযোগ সতীশের। তাঁর দাবি, বিজেপির চেষ্টা সত্ত্বেও বিরোধী জোট অটুটই থাকবে।

রাজ্যসভায় ভোটাভুটি ২৬ আসনে

• বিজেপি ১২

• কংগ্রেস ৫

• তৃণমূল ৪

• টিআরএস ৩

• এসপি ১

• এলডিএফ ১

(শুক্রবার ভোট হল উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্নাটক, ঝাড়খণ্ড, তেলঙ্গানা, ছত্তীসগঢ়ে)

এই দাবির মুখে বিজেপির পক্ষে চিন্তার কথা, শরিক ওমপ্রকাশ রাজভরের দলের এক বিধায়কের ক্রস ভোটিং। যদিও রাজভরের মান ভাঙাতে ক’দিন আগেই নিজে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অমিত।

সবার নজর যখন উত্তরপ্রদেশে, তখন ঝাড়খণ্ডে জেএমএম, জেভিএম-এর সঙ্গে জোট করে বিজেপির থেকে একটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন রাহুল গাঁধী। যদিও শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে রাত পর্যন্ত টানাপড়েন চলে। কর্নাটকেও দু’টির বদলে তিনটি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হাত ধরে একটি পেয়েছে।

এ দফার ভোটে রাজ্যসভায় বিজেপির আসন দশটির মতো বাড়ল বটে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা হল না। চলতি জমানায় আর হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন