ফের ‘হারলেন’ গৌতম রায়। কয়েক মাস আগে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন বিধানসভা ভোটে। এ বার তাঁর সব চেষ্টায় জল ঢেলে লালার টাউন কমিটি দখল করে নিল বিজেপি।
এই প্রথম হাইলাকান্দির কোনও পুরসভার কুর্সি জয় করল গেরুয়া দল।
রাজনৈতিক শিবিরের খবর, নিজের খাসতালুক কাটলিছড়া নির্বাচন চক্রের অন্তর্গত লালা পুরসভাকে কংগ্রেসের দখলে রাখতে মরিয়া ছিলেন গৌতমবাবু। কিন্তু লাভ হল না কিছুই। সুব্রত নাথের নেতৃত্বাধীন হাইলাকান্দি বিজেপি পুরবোর্ড ছিনিয়ে নিল।
বিধানসভা নির্বাচনে গৌতমবাবুর পরাজয়ের পর এ বার লালা পুরসভায় দলের ভরাডুবিতে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস।
আজ বিকেলে লালা পুরসভা দখলের পর অকাল-হোলিতে মাতেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। আতসবাজি ফাটে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত লালা সংশয় ছিল কংগ্রেস, বিজেপি— দুই শিবিরেই। কিন্তু নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপির সমরেন্দ্র দাস পুরসভাপতি নির্বাচিত হন।
জেলাশাসক মলয় বরা, অতিরিক্ত জেলাশাসক রোথ লিয়াংথাং এবং লালার সার্কেল অফিসার মধুমিতা নাথের উপস্থিতিতে লালা পুরসভার উপ-সভাপতি নিয়তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে পুরসভার কাজ শুরু হয়। সভার শুরুতেই বিজেপি পুরসভাপতি পদের প্রার্থী হিসাবে সমরেন্দ্রবাবুর নাম প্রস্তাব করে। পুলক নাথ, তপন নাথ, মঞ্জু সিংহ, অনামিকা ভট্টাচার্যের মতো বিজেপি নেতারা তা সমর্থন করেন। অন্য দিকে কংগ্রেসের গদিচ্যূত সভাপতি বিজয়লক্ষ্মী দেবনাথের নামে সমর্থন জানান পুরসভার সদস্য সারিকা দাস, শঙ্কু চৌধুরী, নিয়তি বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজয়লক্ষ্মীদেবীর পক্ষে সমর্থন
দাঁড়ায় ৪ জনের। বাকি ছিলেন কংগ্রেসের কবিতা নাথ। ঠিক তখন কবিতাদেবী বিজেপির সমরেন্দ্রবাবুকে সমর্থনের কথা জানান। ৬-৪ ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি লালা পুরবোর্ড দখল করে।
গত বছর ৩০ নভেম্বর অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যূত হন বিজয়লক্ষ্মী দেবনাথ। তাঁর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে অনাস্থা পেশ করেছিল বিজেপি। কংগ্রেসের চার পুরসদস্য অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। সে বার ৮-২ ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যূত হন বিজয়লক্ষ্মী। ভোটের ফল বেরনোর পর ভেঙে যায় বোর্ড। তার কয়েক দিন পর গত বছর ৮ ডিসেম্বর লালা পুরসভার কংগ্রেস এবং বিজেপির ৮ জন সদস্য জেলাশাসক মলয় বরার সঙ্গে দেখা করে দ্রুত লালার পুরবোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন।
কংগ্রেসের অন্দরমহলের খবর, লালা পুরবোর্ড দখলে রাখতে তৎপর ছিলেন গৌতমবাবু। কিন্তু তাতে লাভ হল না। জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত নাথ বলেন, ‘‘প্রথম বার বিজেপি লালায় বোর্ড দখল করেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটা দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের মতো কাজ করবে।’’