বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ।— নিজস্ব চিত্র।
বিকেলের ব্যস্ত বাজার এলাকায় হঠাৎই পরপর দু’বার বিস্ফোরণের শব্দ। সম্প্রতি উজানি অসমে হিন্দিভাষীদের উপরে আক্রমণ চালিয়েছিল আলফা। হুমকি দিয়েছিল আরও আক্রমণের। তাই বিস্ফোরণের শব্দ হতেই ছুটোছুটি পড়ে যায় প্রধানত হিন্দিভাষী ব্যবসায়ী অধ্যুষিত গুয়াহাটির ফ্যান্সিবাজার এলাকায়। হুড়়োহুড়িতে পড়েও যান অনেকে। আতঙ্ক কাটলে দেখা গেল রাস্তায় পড়ে ছটফট করছে একটি বাচ্চা মেয়ে ও এক মহিলা। কাতরাচ্ছেন এক ঠেলাচালক ও দোকানের এক কর্মী। পুলিশ পরে জানায়, বোমা বা গ্রেনেড নয় আবর্জনার স্তূপে ফেলে রাখা দু’টি বড় চকলেট বোমা ফেটেই এই বিপত্তি। অবশ্য বোমের প্রকার নয়, হিন্দিভাষীদের মনে ঢুকে পড়া আতঙ্ককেই গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন। তাই ‘বাজি’ ফাটার ঘটনা নিয়েও জোড়া তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ। ব্যস্ত ফ্যান্সি বাজারের জেল রোডে থাকা মিষ্টির দোকানের পাশেই ছিল আবর্জনার স্তূপ। এই স্থানেই অতীতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। আবর্জনার স্তূপের কাছেই দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ক্রেতা-বিক্রেতারা। দ্রুত খবর ছড়ায় ফ্যান্সি বাজারে আলফা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। বাড়তে থাকে গুজব। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট।
পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে বোমা বা গ্রেনেডের কোনও চিহ্নই পায়নি। কমিশনার মুকেশ অগ্রবাল ঘটনাস্থলে এসে তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলার পরে জানান, বোমা বা গ্রেনেড ফাটার কোনও নমুনা সেখানে ছিল না। হাসমা নামে চার বছর বয়সী একটি ফুটপাথবাসী মেয়ে আবর্জনার স্তূপ থেকে একটি প্যাকেট বের করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়। প্যাকেটের ভিতরেই সম্ভবত চকলেট বোম জাতীয় কিছু ছিল। তার জেরেই বিস্ফোরণ। ঠিক কী ফেটে বিস্ফোরণ— তা জানতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছে।
অবশ্য স্থানীয় ব্যবসাদারদের দাবি চকলেট বোমের শব্দ এবং আগুন এত বেশি হওয়া সম্ভব নয়। বিস্ফোরণে সামনের দোকানের টিউব ভেঙে গিয়েছে। হাসমা ছাড়াও পুড়ে জখম হয়েছেন ঠেলা চালক দেবচন্দ্র যাদব, দোকানকর্মী রফিক আলি ও প্রিয় কলিতা নামে পথচারী এক মহিলা।
জেলাশাসক এম আঙ্গামুথু জানান, বিস্ফোরণের কারণ ও প্রকৃতি তদন্ত করার জন্য মহেন্দ্রমোহন চৌধুরি হাসপাতালের যুগ্ম অধিকর্তা ও এক অতিরিক্ত জেলাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুলিশও তদন্তে নেমেছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে সকলের দেহেই পোড়া ক্ষত রয়েছে।