(উপরে) ঘাতক সেই বিএমডব্লিউ। মৃত নভজ্যোত সিংহ (নীচে)। ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির রাস্তায় বাইকে ধাক্কা দিয়েছিল বিএমডব্লিউ গাড়ি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সচিব নভজ্যোত সিংহের। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে সোমবার গ্রেফতার হলেন সেই বিএমডব্লিউ গাড়ির চালক গগনপ্রীত কৌর। নভজ্যোতের স্ত্রী সন্দীপ অভিযোগ করেছেন, দুর্ঘটনার পরে সেই জায়গা থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সূত্রের খবর, সেই হাসপাতাল অভিযুক্ত গগনপ্রীতের বাবার। ঘটনা ধামাচাপ দিতেই সেখানে নভজ্যোত এবং তাঁর স্ত্রীকে গগনপ্রীত নিয়ে গিয়েছিলেন কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনে অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের উপসচিব ছিলেন ৫২ বছরের নভজ্যোত। রবিবার রাতে বাংলাসাহিব গুরুদ্বার থেকে বাইকে চেপে ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী। দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের কাছে তাঁদের বাইকে ধাক্কা দেয় বিএমডব্লিউ গাড়িটি। মৃতের স্ত্রী সন্দীপের অভিযোগ, বাইকটিকে কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় তাতে ধাক্কা দেয় গাড়িটি। সে সময় চালকের আসনে বসেছিলেন ৩৮ বছরের গগনপ্রীত। পাশে বসেছিলেন তাঁর স্বামী পরীক্ষিত মাক্কড়। তাঁদের চামড়ার জিনিসের ব্যবসা রয়েছে। গুরুগ্রামে থাকেন তাঁরা। এফআইআরে পরীক্ষিতেরও নাম রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরে একটি গাড়ির চালক সাহায্যের জন্য ছুটে আসেন। সেই গাড়িতে চাপিয়ে নভজ্যোত এবং সন্দীপকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিতে আহতদের সঙ্গে উঠেছিলেন ঘাতক গাড়ির চালক গগনপ্রীত। সন্দীপ পুলিশকে জানিয়েছেন, কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বার বার গগনপ্রীতকে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কান দেননি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে জিটিবি রোডের এক হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। সাহায্যকারী ওই চালকের নাম গুলফাম। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই এলাকা তেমন ভাবে চিনতেন না। তাই তাঁকে যেখানে যেতে বলা হয়েছিল, তিনি সেখানেই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যান। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা নভজ্যোতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তার পরে থানায় খবর দেন।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ওই হাসপাতালের অন্যতম মালিক হলেন অভিযুক্ত গগনপ্রীতের বাবা। যদিও হাসপাতালের তরফে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, যে দুর্ঘটনার বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই কি অত দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নভজ্যোতকে? নভজ্যোতের পুত্র নভনুর জানিয়েছেন, কাছের হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর বাবাকে বাঁচানো সম্ভব হত। তাঁর অভিযোগ, ওই হাসপাতাল তথ্য চাপা দেওয়ারও চেষ্টা করেছে।