নিজের কর্তব্যটুকুই তো করেছি, বলছেন গগনদীপ

নিজের শরীর দিয়ে মারমুখী জনতার থেকে এক তরুণকে আগলে রেখেছেন পুলিশ অফিসার। নিজের পিঠেই সয়ে নিচ্ছেন জনতার আঘাত।সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ভাইরাল দেশজুড়ে। সবাই কুর্নিশ জানাচ্ছেন খাকি উর্দির ওই রক্ষককে। ফোনে বললেন, ‘‘অন ডিউটি অফিসার হিসেবে আমার কর্তব্যটুকু করেছি মাত্র।’’

Advertisement

সুজিষ্ণু মাহাতো

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০৩:৫৬
Share:

গগনদীপ সিংহ

নিজের শরীর দিয়ে মারমুখী জনতার থেকে এক তরুণকে আগলে রেখেছেন পুলিশ অফিসার। নিজের পিঠেই সয়ে নিচ্ছেন জনতার আঘাত।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ভাইরাল দেশজুড়ে। সবাই কুর্নিশ জানাচ্ছেন খাকি উর্দির ওই রক্ষককে। উত্তরাখণ্ডের রামনগর থানার সেই এসআই, গগনদীপ সিংহ কিন্তু এই খ্যাতি নিয়ে কথা বলতে লজ্জাই পাচ্ছেন। পেশাগত কাজের সূত্রে শনিবার দিল্লি এসেছেন গগনদীপ। ফোনে বললেন, ‘‘অন ডিউটি অফিসার হিসেবে আমার কর্তব্যটুকু করেছি মাত্র।’’

নৈনিতাল জেলার রামনগরের অদূরে গির্জা মন্দিরের কাছে নদীর ধারে বসে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই তরুণ। গঙ্গা দশেরা উৎসব চলছিল নদীতে। তখনই ওই যুগলকে আক্রমণ করে জনতা। ‘অপরাধ’? ওই তরুণ মুসলিম ও তরুণী হিন্দু।

Advertisement

গির্জা মন্দিরেই ডিউটি করছিলেন গগনদীপ। বললেন, ‘‘হঠাৎ দেখি, ওই ছেলে-মেয়েকে পেটাতে শুরু করেছে লোকজন। তখনই না বাঁচাতে পারলে মেরে ফেলবে। এক লেডি অফিসারকে ফোন করে ঘটনাটা জানাই। আর দৌড়ে চলে যাই ভিড়ের মধ্যে।’’ বুকে জড়িয়ে ওই তরুণকে বার করে নিয়ে আসেন তিনি। প্রাপ্তবয়স্ক যুগলকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, পরে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। কিন্তু ওই যুবককে তো আবার আক্রমণ করতে পারে দুষ্কৃতীরা? গগনদীপ আশ্বস্ত করছেন, ‘‘পুলিশের কাছে ওঁদের ঠিকানা আছে। ওঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে।’’

উত্তরাখণ্ডেরই উধম সিংহ নগরের বাসিন্দা বাণিজ্যে স্নাতক গগনদীপ ২০১৫-য় পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। তাঁর এমন কাজে উচ্ছ্বসিত তাঁর পরিজন, মা-দিদি, সহকর্মীরা। গগন বলেন, ‘‘প্রশংসা পেলে তা আরও ভাল কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।’’ ‘খুশি’ আর এক জনও— ভাবী স্ত্রী। তবে তাঁর নাম বা বিয়ের তারিখ নিয়ে মুখ খুলতেই চান না গগন। বলেন, ‘রহনে দিজিয়ে।’’

বছর আঠাশের অনেক তরুণের মতোই গগনদীপেরও পছন্দ বেড়ানো, বই পড়া। সিনেমা দেখারও নেশা রয়েছে। নিজেও তো সিনেমার নায়কের মতো কাজ করলেন। হাসেন গগনদীপ। বলেন, ‘‘আমার যা কাজ, যা করার কথা ছিল, তাই করেছি।’’

তবে দেশে অসহিষ্ণুতার আবহ পীড়া দেয় এই পুলিশ অফিসারকে। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরাখণ্ডে যা ঘটেছে, তা একেবারেই হওয়া উচিত নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নানা ভাবে ঘৃণা ছড়ানো হয়। সেটাও বন্ধ করা দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন