সাদিক খান। ছবি: সংগৃহীত।
ভারত সফরে এসে অমৃতসরে দাঁড়িয়ে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান আজ বললেন, ‘‘জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য ব্রিটিশদের ক্ষমা চাইতেই হবে।’’
দিল্লি-মুম্বই ঘুরে এ দেশে তাঁর সফর শেষ অমৃতসরেই। স্বর্ণ মন্দিরের শহরে পৌঁছন গত কাল। আজ জালিয়ানওয়ালা বাগ ঘুরে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক বলেন, ‘‘১৯১৯ সালের সেই ভয়াবহ ঘটনা ভোলার নয়। যে ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে, ব্রিটিশ সরকারের এ বার অন্তত উচিত তার জন্য ক্ষমা চাওয়া।’’
১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন। পঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালা বাগে নিরস্ত্র বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ভারতীয়দের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ সেনার তৎকালীন সাময়িক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড এডওয়ার্ড হ্যারি ডায়ার। ব্রিটিশ সেনা সে দিন ৩৭৯ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর হিসেব দিলেও বেসরকারি ভাবে নিহতের সংখ্যাটা ছিল হাজারেরও উপর। এই ঘটনার পরে ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশেই ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ডায়ারকে। তখন তো বটেই, তার পরেও একাধিক বার এই হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করেছে ব্রিটিশ সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও দিন এই হত্যালীলার জন্য ক্ষমা চাননি সরকারের কোনও প্রতিনিধি।
১৯৯৭ সালে ভারত সফরে এসে জালিয়ানওয়ালা বাগে গিয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ঘুরে দেখেন, সমালোচনা করেন, কিন্তু ক্ষমা চাননি তিনি। পরে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও ভারত সফরে এসে নিয়ম রক্ষার্থে এক বার দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন বটে, কিন্তু ওই পর্যন্তই।
সম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ লেবার এমপি বীরেন্দ্র শর্মা দাবি জানিয়েছিলেন, জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টেরেসা মে-কে ক্ষমা চাইতে হবে। ব্রিটেনের সবচেয়ে সিনিয়র এই লেবার এমপি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি ‘আর্লি ডে মোশন’ (ইডিএম) বা প্রস্তাবও পেশ করেছিলেন। তার পরে আজ অমৃতসরে দাঁড়িয়ে সাদিকের দাবি যথেষ্টই উল্লেখযোগ্য।