খাদে বাস, মৃত ১৬ অমরনাথ তীর্থযাত্রী

চলতি মাসেরই ১০ তারিখ অনন্তনাগে অমরনাথ যাত্রীদের বাসে হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা। এলোপাথাড়ি গুলিবৃষ্টির মধ্যে সে দিন কোনও মতে বাস নিয়ে পালিয়ে অন্তত ৫০ জন যাত্রীর প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন চালক শেখ সেলিম গফুর।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫০
Share:

চলছে উদ্ধারকাজ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটির পাশেই পড়ে রয়েছে মৃত যাত্রীদের দেহ। রবিবার জম্মু-কাশ্মীরের বানিহালে। ছবি: নিজস্ব চিত্র

দিন কয়েক আগেই জঙ্গি হামলার শিকার হয়েছিল অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের একটি বাস। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৮ জন। এ বার অমরনাথ তীর্থযাত্রী বোঝাই বাস গিয়ে পড়ল একশো ফুট গভীর খাদে। আজ দুপুরে জম্মু-কাশ্মীরের রম্বান জেলায় বানিহালের কাছে নাচিলানা এলাকার ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আহতের সংখ্যা অন্তত ৩০।

Advertisement

চলতি মাসেরই ১০ তারিখ অনন্তনাগে অমরনাথ যাত্রীদের বাসে হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা। এলোপাথাড়ি গুলিবৃষ্টির মধ্যে সে দিন কোনও মতে বাস নিয়ে পালিয়ে অন্তত ৫০ জন যাত্রীর প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন চালক শেখ সেলিম গফুর। পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসন তো বটেই, বাসের যাত্রীরাও বলেছিলেন সেলিমের কথা। আজও দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের একাধিক যাত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে স্থানীয় সেলিম, গফুরদের প্রশংসা। বাসটি খাদে পড়ে যাওয়ার প্রচণ্ড আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রাই প্রথমে ছুটে আসেন। সেনা, সিআরপিএফ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই দড়ির সাহায্যে খাদে নেমে ভাঙাচোরা বাস থেকে বের করে আনেন বহু যাত্রীকে।

বানিহালের এক পদস্থ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, জম্মু থেকে শ্রীনগর যাচ্ছিল স্টেট রোড ট্রান্সপোর্টের বাসটি। পহেলগাম বেস ক্যাম্প থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে নাচিলানায় একটি গভীর বাঁকে আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। বাসটি সোজা গিয়ে পড়ে খাদে। দুর্গম ওই রাস্তায় আহতদের হাসপাতালে পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। প্রথমে খোলা আকাশের নীচেই আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে কপ্টারে তাঁদের অন্যত্র সরানো হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভোট আজ

পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ জন গুরুতর আহতকে জম্মু এবং বাকি পাঁচ জনকে সৌরার এসকেআইএমএসে ভর্তি করানো হয়েছে। বানিহালের হাসপাতালে রয়েছেন দু’জন। বাসের চালক ও খালাসির কী অবস্থা, তা এখনও জানাতে পারেনি পুলিশ।

সে দিনের জঙ্গি হামলার পরে সরকার বারবার অমরনাথ যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়ানোয় গুরুত্বের কথা বলেছে। তার পরেও আজকের দুর্ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিল পুণ্যার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে। যদিও আজকের দুর্ঘটনার পিছনে এখনও নাশকতার গন্ধ পায়নি পুলিশ।

পাহাড়ি ওই রাস্তায় সাধারণত দক্ষ চালকেরাই বাস চালান। তবে আজ কী করে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালেন? পুলিশের একাংশের ধারণা, সম্ভবত টায়ার ফেটেই বিপত্তি ঘটে। পাহাড়ি সরু রাস্তায় চালক আর সামলাতে পারেননি। পুলিশের বক্তব্য, বাসটিতে মোট ৪৩ জন তীর্থযাত্রীর পাশাপাশি কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাও ছিলেন। রাত পর্যন্ত মৃতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। শুধু জানা গিয়েছে, মৃতদের দু’জন রাজস্থানের বাসিন্দা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement