‘ক্যাপিটাল ফার্স্ট’-এর চেয়ারম্যান বৈদ্যনাথন ভেম্বু। ছবি: সংগৃহীত
বোনাস হিসাবে কর্মীদের প্রায় প্রতি বছরই কর্মীদের গাড়ি-বাড়ি দেওয়া প্রায় অভ্যেস করে ফেলেছেন গুজরাতের হিরে ব্যবসায়ী সাবজি ঢোলাকিয়া ওরফে ‘সাবজি কাকা’। এবার এমনই আরও এক ‘দিলদার’ ব্যবসায়ীর খোঁজ মিলল চেন্নাইয়ে। তিনি ‘ক্যাপিটাল ফার্স্ট’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বৈদ্যনাথন ভেম্বু। তিনি শুধু কর্মীদেরই নয়, ড্রাইভার-পরিচারিকা এমনকি, সংস্থা ছেড়ে যাওয়া বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যেও অকাতরে বিলিয়ে দিলেন প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি! তবে বৈদ্যনাথনের বক্তব্য, এই মানুষগুলির সংস্থার প্রতি ভালবাসায় তিনি কৃতজ্ঞ।এই দান সেই কৃতজ্ঞতারই প্রতিফলন।
মাঝারি, ছোট ও ক্ষুদ্র শিল্পপতিদের ঋণ দেয় ক্যাপিটাল ফার্স্ট। সংস্থা প্রতিষ্ঠার সময় মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বৈদ্যনাথন। তবে তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন মিলে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে বৈদ্যনাথনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘‘সংস্থার চেয়ারম্যান তাঁর ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা কিছু সম্পত্তি তাঁর সহকর্মী ও প্রিয়জনদের দান করে দিতে চান।’’ তবে সম্পত্তি নগদ টাকা নয়। বৈদ্যনাথের হাতে থাকা সংস্থার ৪.২৯ লাখ শেয়ার। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের হিসেবে (প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪৭০-৪৮০ টাকা) যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
আর এই বিপুল সম্পত্তির কে কত পাবেন? সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বৈদ্যনাথন। এর মধ্যে তাঁর ২৩ জন সহকর্মী এবং তিন জন প্রাক্তন কর্মীর প্রত্যেককে ১১ হাজার শেয়ার দিয়েছেন। ৬৫০০ করে শেয়ার পাবেন তাঁর পাঁচ জন ব্যক্তিগত কর্মী, যার মধ্যে তাঁর গাড়ির চালক এবং পরিচারিকাও রয়েছেন। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার শেয়ার বৈদ্যনাথন বিলিয়েছেন এমন আত্মীয় পরিজনদের, যাঁরা সরাসরি তাঁর উত্তরাধিকার নন। তবে এই বিপুল সম্পত্তির প্রাপকদের অবশ্য আয়কর দিতে হবে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: মাটিতে শুয়ে প্রতিবাদ, চাকরি গেল ছয় বিমানকর্মীর
এই সম্পত্তি দেওয়ার আগে ‘ক্যাপিটাল ফার্স্ট’ সংস্থায় বৈদ্যনাথের মালিকানায় ছিল ৪০.৪ লাখ শেয়ার। এখন সেটাই কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬.১১ লাখ। আর এই খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ‘২০১৮-র সেরা বস’ বৈদ্যনাথন। কেউ লিখেছেন ‘বস হো তো অ্যায়সা’।
আরও পড়ুন: সময়ে কাজ না করতে পারলেই মূত্রপান, বেত্রাঘাত, খাওয়ানো হয় কীটপতঙ্গ!
বৈদ্যনাথনের বক্তব্য হিসাবে সংস্থার ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠার সময় ‘ক্যাপিটাল ফার্স্ট’-এর কার্যত অস্তিত্বই ছিল না। ২০১২-১৩ সালে ভারতের অর্থনীতির অবস্থাও ছিল টালমাটাল। সেই সময় কোনও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করে সেটা দাঁড় করানো ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জের। তবু সেই দুঃসময়ে মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে আমার সঙ্গে এসে কাজ করেছেন। কঠোর পরিশ্রম করেছেন, সংস্থার নীতি বাস্তবায়িত করেছেন, অনেক উদ্ভাবনী ভাবনা নিয়ে এসেছেন। সেই সব কিছুর কৃতজ্ঞতা হিসাবেই এই দান।’’