বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আপের বিধায়কেরা। ছবি: পিটিআই।
আবগারি দুর্নীতি নিয়ে দিল্লি বিধানসভায় সিএজি (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল)-র রিপোর্ট পেশ করা হল মঙ্গলবার। সেই রিপোর্ট ঘিরে হইচই শুরু করেন বিরোধী দল আম আদমি পার্টি (আপ)-এর বিধায়কেরা। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা আতিশী মার্লেনা-সহ ১৫ জন আপ বিধায়ককে শুধু মঙ্গলবারের অধিবেশনের জন্য নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্ত দুপুর পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়েছেন।
চলতি মাসেই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। তার আগে থেকেই পূর্বতন আপ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে পদ্মশিবির। পূর্বতন সরকারের আমলে ওঠা আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার সিএজি-র রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করেছে ক্ষমতাশীন দল। ওই দুর্নীতির মামলায় জেলে গিয়েছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। সেই দুর্নীতিকাণ্ডে মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় রিপোর্ট পেশ করেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত। এর পরে উপরাজ্যপাল ভিকে সক্সেনা বক্তব্য শুরু করতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আপের বিধায়কেরা। বিজেপি সরকার-বিরোধী স্লোগান দেন। বিআর অম্বেডকরের ছবি তুলে ধরে ‘জয় ভিম’ স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
স্পিকার বীরেন্দ্র বার বার তাঁদের চুপ করার অনুরোধ করেন। যদিও আপ বিধায়কদের স্লোগান চলতে থাকে। এর পরেই আপের ১৫ জন বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। আতিশীর পাশাপাশি তালিকায় রয়েছেন আপের গোপাল রায়। সাসপেন্ড হওয়ার পরে কক্ষ থেকে বেরিয়ে বিধানসভা চত্বরে বসে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন আপের বিধায়কেরা। আতিশী অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে অম্বেডকরের ছবি সরিয়ে তাঁকে অপমান করেছে দিল্লির নতুন বিজেপি সরকার।
আপের অভিযোগ, রেখার দফতরে অম্বেডকর এবং ভগৎ সিংহের ছবি সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ছবি রাখা হয়েছে। দিল্লি বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে যে, আতিশীর আমলে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের পিছনে যে অম্বেডকর এবং ভগতের ছবি ছিল, সেগুলি পাশের দেওয়ালে রাখা হয়েছে। পরিবর্তে ওই দেওয়ালে মহাত্মা গান্ধী, মোদী এবং মুর্মুর ছবি রাখা হয়েছে। বিরোধী দলনেতা আতিশী মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়েছেন, যত ক্ষণ না অম্বেডকর এবং ভগতের ছবি আগের জায়গায় রাখা হবে, তত ক্ষণ তাঁদের আন্দোলন চলবে। বিধানসভার বাইরে তাঁরা স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘‘বাবাসাহেবের এই অপমান দেশ সহ্য করবে না।’’