কিছু দিন আগেই বদলে গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট ও দেশের হাইকোর্টগুলির বিচারপতিদের নিয়োগের ব্যবস্থা। দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা কলেজিয়াম ব্যবস্থা পাল্টে জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন গড়ার ছাড়পত্র দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংসদের সিলমোহরও পড়েছিল তাতে। কিন্তু গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা দেশের প্রধান বিচারপতির একটি চিঠিতে আচমকাই কমিশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীকে দেশের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এখন তাঁর পক্ষে নিয়োগ কমিশনের বৈঠকে যোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কেননা, কমিশনের গঠনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি দাখিল করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে মামলা বিচারাধীন। ফলে যত ক্ষণ পর্যন্ত কমিশনের বৈধতা সর্বোচ্চ আদালতে নিশ্চিত হচ্ছে, তত ক্ষণ তিনি বৈঠকে যাবেন না।
পাশাপাশি, নিয়োগ কমিশনের সদস্য হিসেবে দেশের বিখ্যাত ব্যক্তিদের থেকে দু’জনকে বেছে নেওয়ার কথা তিন জনের একটি কমিটির। প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিরোধী দলের নেতা ও প্রধান বিচারপতি এই কমিটির সদস্য। দাত্তু জানিয়েছেন, কমিশনের দুই সদস্যকে মনোনীত করাও তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। নিয়োগ কমিশনে এই দু’জন ছাড়াও দেশের প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের দু’জন সিনিয়র বিচারপতি, দেশের আইনমন্ত্রীকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জে এস কেহরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলাটি উঠেছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এখানে মোদীকে লেখা প্রধান বিচারপতির চিঠির কথা জানান। পরে এ বিষয়ে সিনিয়র কৌঁসুলিদের মতও জানতে চায় বেঞ্চ। অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে প্রধান বিচারপতির থাকা বাধ্যতামূলক। ফলে এই কমিটির বৈঠকে যাওয়ার বিষয়ে বেঞ্চের নির্দেশ জরুরি। আইনজীবী ফলি নরিম্যান জানান, যদি প্রধান বিচারপতি বৈঠকে অংশগ্রহণ না করেন, তা হলে সাংবিধানিক বেঞ্চ অন্য কাউকে সেখানে পাঠাতে নির্দেশ দিতে পারে।