বিশ্বভারতীর তালিকায় বিরক্ত কেন্দ্র, এ বার দেশিকোত্তম পাচ্ছেন না কেউই

মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের খবর, তালিকার নামগুলি দেখে খুবই ক্ষুব্ধ হন দিল্লির নেতৃত্ব। অমিতাভ ঘোষ এবং গুলজার দু’জনেই যে কোনও বিষয়ে প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধিতা করেন।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০৩:০২
Share:

তোড়জোড়: শান্তিনিকেতনে সাজছে বাংলাদেশ ভবন। নিজস্ব চিত্র

আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিলেও এ বার দেশিকোত্তম সম্মান পাচ্ছেন না কেউই।

Advertisement

বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ এই সম্মানের সম্ভাব্য প্রাপক হিসেবে অমিতাভ বচ্চন, অমিতাভ ঘোষ, গুলজার, বিজ্ঞানী অশোক সেন, সুনীতি পাঠক, যোগেন চৌধুরী, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়— এই সাত জনের নাম কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে এই তালিকা পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের খবর, তালিকার নামগুলি দেখে খুবই ক্ষুব্ধ হন দিল্লির নেতৃত্ব। অমিতাভ ঘোষ এবং গুলজার দু’জনেই যে কোনও বিষয়ে প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধিতা করেন। গুজরাতে গোধরা কাণ্ডের পরে দু’জনেই সরব হয়েছিলেন। আবার যোগেন চৌধুরী নামী শিল্পী হলেও তৃণমূলের সাংসদ। দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং শিক্ষা মন্ত্রক, কেউই বিশ্বভারতীর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এই নাম বাছাই মেনে নিতে পারেনি। হঠাৎ সমাবর্তনের দিন ঠিক হওয়ায় নামের নতুন তালিকা তৈরি করে পাঠানোর সময়ও নেই। এর পরে শেখ হাসিনাকে এই সম্মান দেওয়া যায় কি না, সেটা দেখতে বলে কেন্দ্র। কিন্তু হাসিনা ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম পেয়ে যাওয়ায় সে সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেয় বিশ্বভারতী। তখন দিল্লি জানিয়ে দেয়, প্রধানমন্ত্ৰী এ বারে কাউকেই দেশিকোত্তম দেবেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন: সমন্বয় কোথায়, প্রশ্ন মাওবাদী হানার পরে

সরকারি ভাবে অবশ্য দেশিকোত্তম না দেওয়ার অন্য কারণ দেখিয়েছে দিল্লি। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর হাতে সময় এ বার খুবই কম। সকল ১০টা থেকে ২টোর মধ্যে গোটা অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। সমাবর্তন ছাড়া বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় রাখতে হয়েছে। তাই দেশিকোত্তম প্রদানের অনুষ্ঠানটি ‘পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে’। সেটি বাতিল করা হচ্ছে না।

দেশিকোত্তম-এর পাশাপাশি ৩ জনকে গগন এবং ৩ জনকে রথীন্দ্র পুরস্কার দেওয়ারও কথা ছিল। সেই সম্মান প্রদানও স্থগিত রাখতে হচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। প্রথমে ঠিক ছিল, বাংলাদেশ ভবনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং বাংলাদেশের দুই মন্ত্রীও বক্তৃতা দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে তিনিও বলবেন। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, শুধু দুই প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাই থাকছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথামাফিক বেদগানও সম্ভবত এ বার হচ্ছে না। এমনকি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন না-করার পরামর্শও দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

দিল্লির নির্দেশ পেয়ে সম্মান প্রদান পর্বটি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়েছে কর্মসমিতি। কিন্তু সমাবর্তনে দেশিকোত্তম না দেওয়ার ঘটনা
এর আগে কবে হয়েছিল, তা শিক্ষা মন্ত্রকের কর্তারাও মনে করতে পারছেন না। অস্থায়ী উপাচার্য সবুজকলি সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর টেলিফোন বেজে গিয়েছে। এসএমএস-এরও জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন