কেন্দ্রীয় বাজেটের পর থেকেই সুর চড়াচ্ছিল এনডিএ-র শরিক দল টিডিপি (তেলুগু দেশম পার্টি)। তাদের অভিযোগ ছিল, বাজেটে বঞ্চিত করা হয়েছে অন্ধ্রকে। সেই চাপানউতোরের মধ্যেই কিন্তু কেন্দ্র গত কয়েক দিনে বিভিন্ন খাতে ১২৬৯ কোটি আর্থিক সংস্থান করে দিয়েছে।
গুজরাত নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়া এবং রাজস্থানে উপনির্বাচনে পরাস্ত হওয়ার পর থেকে বিজেপি কিছুটা চাপে রয়েছে। তার মধ্যে টিডিপি মুখ খুলে জটিলতা আরও বাড়িয়েছে। সনিয়া গাঁধী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছেন। এই অবস্থায় অন্ধ্রের আর্থিক দাবিদাওয়ার খানিকটা মিটিয়ে কেন্দ্র আপাতত শরিকি সমস্যা সামাল দিতে চাইল বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কালই রাজ্যসভায় যদিও টিআরএস (তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি) দাবি করেছিল, টিডিপি এবং কেন্দ্র নিজেদের মধ্যে ‘ম্যাচ গড়াপেটা’য় নেমেছে। টিআরএস নেতা কেশব রাও বলেন, তেলঙ্গানা কিন্তু অন্ধ্রের চেয়েও অনেক বেশি বঞ্চিত। কিন্তু তাঁরা ‘ভিক্ষাপাত্র’ হাতে দাঁড়াবেন না।
আপাতত কেন্দ্র নানা খাতে অন্ধ্রকে কিছু টাকা বরাদ্দ করেছে। টিডিপি-র অভিযোগের বড় অংশ ছিল অন্ধ্রের বহুমুখী সেচ প্রকল্প পলাভরমকে ঘিরে। পলাভরম জাতীয় প্রকল্প হিসেবে স্বীকৃত। টিডিপি-র বক্তব্য, রাজ্য ৭২০০ কোটি খরচ করে ফেললেও কেন্দ্র ৪৩২৯ কোটির বেশি টাকা পাঠায়নি। এখন কেন্দ্র ৪১৭ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা পলাভরমের খাতে পাঠাল। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে বণ্টন-পরবর্তী রাজস্ব ঘাটতি মিটিয়ে দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। সেই খাতে অন্ধ্রকে ৩৬৯ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ছাড়া শহর এলাকার পুর প্রশাসনগুলির জন্য ২৫৩ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার অনুদান মঞ্জুর হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবায় ১৯৬ কোটি ৯২ লক্ষ এবং একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ৩১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা পাচ্ছে অন্ধ্র। বিজেপির পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে বলা হয়েছে, অন্ধ্রের বঞ্চনাটা শুধু প্রচারই, বাস্তব নয়। টিডিপি যেন কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে ‘সুষ্ঠু’ ভাবে বিষয়টি মিটিয়ে নেয়। আর্থিক সংস্থান সেই ‘সুষ্ঠু’ মীমাংসার দিকে তাকিয়েই, মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।