Kerala CPM

কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত, মমতার সুর কেরল সিপিএমে

কেরলে ইডি এবং শুল্ক দফতরের নানা পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে একই অভিযোগ তুলছেন ওই রাজ্যের সিপিএম সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কেরল শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০৫:১৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলের সরকারকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগে বাংলায় সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগের ঘটনাপ্রবাহ একই অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিল কেরলের সিপিএমকে। কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে প্রচারে নামছে কেরলের শাসক দল।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক বঙ্গ সফরের সময়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করেছেন, আয়কর-সহ নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে দিল্লির বিজেপি সরকার রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। কেরলে ইডি এবং শুল্ক দফতরের নানা পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে একই অভিযোগ তুলছেন ওই রাজ্যের সিপিএম সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন। তাঁর ছোট ছেলে বিনীশকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। মাদক-চক্রকে টাকা জোগানোর অভিযোগ উঠেছে বিনীশ কোডিয়ারির বিরুদ্ধে। বাংলা ও কেরলের দুই শাসক দলই মনে করছে, তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের পরিবারকেও ‘নিশানা’ করা হচ্ছে। বালকৃষ্ণন অবশ্য ফের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বিনীশ সরকারি দফতর বা রাজনৈতিক দলে নেই, কোনও পদাধিকারীও নন। ব্যক্তিগত ভাবে বিনীশ তাঁর আইনি লড়াই লড়বেন।

কেরলের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী কে টি জলিলকে জেরা করার জন্য নোটিস পাঠিয়েছে শুল্ক দফতর। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব সি এম রবীন্দ্রনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে ইডি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সচিব এম শিবশঙ্করকে আগেই ইডি গ্রেফতার করেছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির পরপর এমন পদক্ষেপ নিয়ে তিরুঅনন্তপুরমে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিশদে আলোচনা হয়েছে। সে রাজ্যে পুরসভা ও স্থানীয় প্রশাসনের ভোট আসন্ন। তার পরেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বাম সরকারের ভাবমূর্তি ‘নষ্ট’ করার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ বোঝাতে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

Advertisement

দলের রাজ্য সম্পাদক বালকৃষ্ণনের মতে, ‘‘সরকারের কাজে কোনও অনিয়ম বা দুর্নীতি আছে কি না, তা দেখার জন্য সিএজি আছে। এখানে সরকারি প্রকল্প ধরে ধরে আটকে দেওয়ার জন্য ইডি-কে ব্যবহার করা হচ্ছে!’’ বাংলার ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের একই ভূমিকার অভিযোগ এনে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের মন্তব্য, ‘‘বিজেপির আমলে খনি, বন্দর বা বিমানবন্দর কারা কী ভাবে পেয়েছে, কারা লাভবান হয়েছে, সে সব তদন্ত করে দেখা হোক না! কিন্তু তা না করে শুধু বিরোধীদের জব্দ করার উদ্দেশ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’ বিনীশ-কাণ্ডের জেরে কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে বালকৃষ্ণনের ইস্তফার বিরোধী দাবি অবশ্য খারিজ হয়ে গিয়েছে রাজ্য কমিটিতেও। সূত্রের খবর, ঘটনার জেরে দলের ভাবমূর্তিতে যে ধাক্কা লাগছে, সে কথা উল্লেখ করেছেন রাজ্য কমিটির কয়েক জন সদস্য। কিন্তু বিনীশ দলের সদস্য নন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ‘দায়’ নিয়ে রাজ্য সম্পাদক সরে দাঁড়ালে ভোটের আগে দলের সম্পর্কে আরও ‘নেতিবাচক’ বার্তা যাবে বলে আলোচনায় ঠিক হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন