উৎসবের উদ্বোধনে। মাজুলি মহোৎসবে। —নিজস্ব চিত্র।
মাজুলি মহোৎসবে যোগ দিয়ে মাজুলির উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মহেশ শর্মা। পাশাপাশি, গুয়াহাটিকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব হেলিকপ্টার হাব তৈরির কথাও জানালেন। আশ্বাস মিলল, মাজুলির নাম ‘ইউনেস্কো’র ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকায় তোলার চেষ্টা করবে কেন্দ্র।
তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপস্থিতিতে গত কাল মাজুলিতে শুরু হয় চতুর্থ উত্তর-পূর্ব যুব মহোৎসব। গড়মুড়ের মিনি স্টেডিয়ামে তার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন প্রতিমন্ত্রী অনন্তকুমার হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও। মহোৎসব উপলক্ষ্যে মাজুলিতে এসেছেন উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যের ২ হাজারের
বেশি তরুণ-তরুণী।
মন্ত্রী মহেশ জানান, মাজুলির সার্বিক বিকাশের জন্য কেন্দ্র উদ্যোগ নিচ্ছে। বৈষ্ণব ধর্মের পীঠস্থান মাজুলিকে গোটা দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল হিসেবে তুলে ধরতে পদক্ষেপ করা হবে। ভারত তথা এশিয়ার বৃহত্তম নদ-দ্বীপের উন্নয়নে খরচ করা হবে ১৫ কোটি টাকা। তিনি জানান, শুধু মাজুলিই নয়, রাজ্য ও উত্তর-পূর্বের আরও কয়েকটি প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক জায়গাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। যোগাযোগের সমস্যার কথা মেনে নিয়ে মন্ত্রী জানান, মাজুলির সঙ্গে হেলিকপ্টার যোগাযোগের কথাও ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি, গুয়াহাটিকে কেন্দ্র
করে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন দুর্গম পর্যটনস্থলে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালুর কথা ভাবছে কেন্দ্র।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মাজুলির শোচনীয় হালের ছবিটাও মন্ত্রীদের চোখে পড়েছে। প্রতি বছর জমিক্ষয়ে মাজুলির আয়তনও কমছে। ঘরহীন হাজার দশেক পরিবার। কর্দমাক্ত অনুষ্ঠানস্থলে দাঁড়িয়েই মন্ত্রীরা আশ্বাস দেন, মাজুলিতে বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভূমিক্ষয়ের কারণে মাজুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকায় মাজুলির নাম ঢোকানো যায়নি। মন্ত্রী অনন্তকুমার জানান, কেন্দ্র মাজুলিকে বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র করতে বদ্ধপরিকর। প্যারিসে পরবর্তী বৈঠকে মাজুলির
নাম ঢোকানোর জন্য সব রকম পদক্ষেপ করা হবে।
স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ জানান, মাজুলিকে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল হিসেবে দেশের কাছে তুলে ধরতেই এখানে যুব মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
মহোৎসবে মাজুলির সমাজ-সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ১৬ জন ব্যক্তিত্বকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়. উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হয়েছে প্যারাসেলিং।
তা ছাড়া থাকবে বিভিন্ন রাজ্যের লোকনৃত্য, লোকগান, একাঙ্ক নাটক, রক ব্যান্ড, মার্শাল আর্ট প্রদর্শনী,
খাদ্য উৎসব ও যুবসমাজকে নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা।