সংরক্ষণ নিয়ে যোগীর প্রস্তাব খারিজ কেন্দ্রের

উত্তরপ্রদেশের ১২টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন আসন্ন। এই সময়েই যোগী সরকার কাশ্যপ, রাজভড়, কুমহার, মাল্লা, মাঝিঁর মতো অন্যান্য অনগ্রসর জাতির (ওবিসি) ১৭টি গোষ্ঠীকে তফসিলি জাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

সংরক্ষণ নিয়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংসদে আজ কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের ১২টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন আসন্ন। এই সময়েই যোগী সরকার কাশ্যপ, রাজভড়, কুমহার, মাল্লা, মাঝিঁর মতো অন্যান্য অনগ্রসর জাতির (ওবিসি) ১৭টি গোষ্ঠীকে তফসিলি জাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে আজ বিষয়টি তুলে ধরেন বিএসপি নেতা সতীশ মিশ্র। রাজ্য সরকারকে ‘নির্দেশমূলক পরামর্শ’ বা ‘অ্যাডভাইসরি’ পাঠানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি তোলেন তিনি। মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘সংরক্ষণের তালিকায় রদবদলের অধিকার কোনও রাজ্য সরকারের নেই, এমনকি রাষ্ট্রপতিরও নেই। তালিকা বদলের ক্ষমতা একমাত্র সংসদেরই রয়েছে।’’ বিএসপি সাংসদের মতে, ওই ১৭টি গোষ্ঠী এখন ওবিসি কিংবা তফসিলি জাতির জন্য দেওয়া সুবিধার কোনওটাই পাবেন না। এর পরেই কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রী থেবরচন্দ্র গহলৌত জানিয়ে দেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার যথাযথ পদক্ষেপ করেনি। কারণ, একমাত্র সংসদই সংরক্ষণের তালিকায় বদল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

১৭টি গোষ্ঠীকে জাতের শংসাপত্র দেওয়ার জন্য জুন মাসের ২৪ তারিখ জেলাশাসক ও কমিশনারদের নির্দেশ দিয়েছিল যোগী সরকার। তবে গহলৌত আজ এই শংসাপত্র না দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে বলেছেন। জানিয়েছেন, বিষয়টিকে নিয়ে কেউ আদালতে যেতে পারে। তবে মন্ত্রীর মতে, উত্তরপ্রদেশ সরকার যদি সংরক্ষণের এই প্রস্তাব নিয়ে এগোতে চায়, তা হলে বিশেষ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে তাদের, প্রস্তাব পাঠাতে হবে কেন্দ্রের কাছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারে। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু এই বিষয় নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন।

Advertisement

তবে যোগী সরকারই প্রথম নয়, যাঁরা সংরক্ষণ তালিকা নিয়ে এই পদক্ষেপ করেছে। ২০০৫ সালে মুলায়ম সিংহ যাদবের সরকার এর মধ্যের ১১ টি গোষ্ঠীকে তফসিলি জাতির তালিকায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যায়। পরে কেন্দ্রের কাছে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবও পাঠিয়েছিল সমাজবাদী পার্টির সরকার। মায়াবতী সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করেন। আবার ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটের মুখে অখিলেশ যাদবও সংরক্ষণের এই প্রস্তাবে সবুজসঙ্কেত দিয়েছিলেন। বিষয়টি আদালতে গড়ায়।

তবে ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মুখে যোগী সরকারের পদক্ষেপ রাজনৈতিক ফায়দা নিতেই করা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করছেন। এ দিনই গোটা দেশে এবং উত্তরপ্রদেশে তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর জাতির জন্য সংরক্ষিত শূন্যপদগুলি পূরণ না হওয়ার জন্য মোদী ও যোগী সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে বিজেপির সংকীর্ণ মানসিকতা ফুটে উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন