প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে তিহাড় জেলে গিয়েও দীর্ঘ সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি অরবিন্দ কেজরীওয়াল। জেলে বসেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কারণ অভিযুক্ত মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীকে সরানোর কোনও ব্যবস্থা সংবিধানে ছিল না। এটা মাথায় রেখেই আগামিকাল তিনটি নতুন বিল আনতে চলেছে মোদী সরকার।
বিলগুলিতে বলা হয়েছে— যদি প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রী গুরুতর অভিযোগে টানা ত্রিশ দিন ধরে হেফাজতে থাকেন এবং যদি তাঁর পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তা হলে ৩১ দিনের দিন সেই অভিযুক্তকে পদ থেকে সরে যেতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য এ এক নতুন উপায় বলে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির।
বাদল অধিবেশন শেষ হতে আর দু’দিন বাকি। ঠিক তার আগে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ বিষয়ক তিনটি বিল আসছে। প্রথম বিলটি হল, সংবিধানের ১৩০তম সংশোধনী বিল, দ্বিতীয়টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সংশোধনী বিল এবং তৃতীয়টি হল জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন সংশোধনী বিল। বিল পেশের পরেই বিস্তারিত আলোচনার জন্য সেগুলি সংসদের যৌথ কমিটির কাছে পাঠানোর প্রস্তাব দেবে সরকার। তৃতীয় বিলটিতে কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকেও একই ভাবে অপসারণের ব্যবস্থা থাকবে।
বিলে বলা হয়েছে, বর্তমানে সংবিধানে এমন কোনও ব্যবস্থা নেই যেখানে কোনও মন্ত্রীকে গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার করার পরে পদ থেকে সরানো যায়। এটা প্রত্যাশিত যে, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য মন্ত্রীদের আচরণ সংশয়ের ঊর্ধ্বে থাকবে। তাই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের মন্ত্রী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণের আইনি ব্যবস্থা তৈরির জন্য সংবিধানের ৭৫, ১৬৪ এবং ২৩৯ক (ক) অনুচ্ছেদ সংশোধন করা প্রয়োজন।
স্বাভাবিক ভাবেই বিলটিতে প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের প্রস্তাব থাকায় এ থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কৌশল নিতে চাইবে বিজেপি। রাজনীতিকদের মতে, বিজেপি প্রচার করার সুযোগ পাবে যে, নরেন্দ্র মোদী নিজেই নিজেকে সরানোর জন্য বিল আনছেন। অন্য দিকে বিরোধীদের বক্তব্য, ভোটার তালিকা নিয়ে সরকার যে ব্যাকফুটে, তার থেকে নজর ঘোরানোর জন্যই ওই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আগামী দিনে যে সব বিরোধীশাসিত রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, সেখানে বিজেপি ওই অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। প্রস্তাবিত বিল সম্পর্কে কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি লিখেছেন, ‘‘বিরোধীদের টলিয়ে দিতে সবচেয়ে ভাল উপায় হল পক্ষপাতদুষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থাদের দিয়ে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করানো! যাদের ভোটে হারানো যায় না,তাদের ইচ্ছামতো গ্রেফতার করিয়ে সরিয়ে দেওয়া!’’
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে