আইএএস ডি কে রবির মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবিতে আজ উত্তাল হয়ে উঠল কর্নাটক। বেঙ্গালুরুতে এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন বিজেপির যুব শাখা এবিভিপির সদস্যরা। বিধানসভার সামনে বিরোধী নেতৃত্বের ধর্নাও চলেছে সন্ধে পর্যন্ত। দাবি একটাই, সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক রবির মৃত্যুর তদন্তভার। আজ একই দাবিতে সরব হয়েছেন অন্য আইএএস আধিকারিকরাও।
গত কালই রবির পরিবারের তরফে তাঁর মা গৌরাম্মা দাবি করেছেন, ছেলের মৃত্যুর সুবিচার না পেলে গণ-আত্মহত্যার পথে যাবেন পরিবারের সবাই। বিজেপি নেতা জগদীশ শেট্টার অভিযোগ তোলেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই সিবিআই তদন্তে রাজি হচ্ছে না রাজ্য সরকার। আজ সংসদে জিরো আওয়ারে এই প্রসঙ্গ তোলেন কর্নাটকের বিজেপি সদস্য প্রহ্লাদ জোশী। জানান, বছর পঁয়ত্রিশের ওই আইএএস-এর মৃত্যুর তদন্তের দাবিতে কর্নাটকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। কংগ্রেসের তরফে অবশ্য এ কথা অস্বীকার করে জানানো হয়, যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টির তদন্ত করছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বচসা শুরু হলে মিনিট পনেরোর জন্য স্থগিত থাকে সংসদ।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ জানিয়ে দেন, কর্নাটক সরকার চাইলে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল পাঠাতে রাজি তাঁরা। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে তিনি কথাও বলেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে। তবে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে জে জর্জ আজ জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভার সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তাই এখনই সিবিআই তদন্তের কথা ভাবছে না রাজ্য সরকার।
গত কালই পুলিশি জেরায় উঠে এসেছে এস এ নারায়ণস্বামী নামে এক বিধায়কের নাম। রবির শ্বশুর হনুমন্তরায়াপ্পা দাবি করেছেন, একটি সরকারি জমি অবৈধ ভাবে বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন নারায়ণস্বামী। সেই জমিটি পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা ছিল রবির। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্তও গড়ায়। তবে এ নিয়ে নারায়ণস্বামী রবির উপর কোনও চাপ সৃষ্টি করেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অভিযোগ অস্বীকার করে নারায়ণস্বামী জানিয়েছেন, তিনি কোনও জমি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নন, তাই হুমকি বা চাপ দেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না।
গত সোমবার সন্ধেয় বেঙ্গালুরুর মাদিভালায় সরকারি বাসভবন থেকে ডি কে রবির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন রবি। তবে রবির পরিবারের তরফে জানানো হয়, আত্মহত্যা করার মানুষ ছিলেন না রবি। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি করেন রবির মা গৌরাম্মা ও ভাই রমেশ। অনেক দিন ধরেই বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের এই আমলা। তার জেরে তিনি বেশ কিছু দিন ধরেই হুমকি ফোন পাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। গত বছর অক্টোবরে কোলারের ডেপুটি কমিশনার পদ থেকে বেঙ্গালুরুতে বদলি হন রবি। তিনি নানা উন্নয়নমূলক কাজ করতেন বলে তাঁর বদলির বিরোধিতা করে সেই সময় বিক্ষোভ দেখান কোলার জেলার বাসিন্দারা।